২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে: গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও পূজার সঠিক বাংলা তারিখ জানুন এখানে Parua Astami 2025 Date Bengali Festival

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে — এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন? জানুন এ বছরের পৌড়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ, রীতি ও এর ঐতিহ্যের গভীর অর্থ এক প্রতিবেদনে।

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে এবং পৌড়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ ও উৎসবের রীতি
২০২৫ সালের পড়ুয়া অষ্টমীতে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে চলছে ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল ফোঁটার আয়োজন।
Ujjwal Dey

Published By Ujjwal Dey

Updated on: November 11, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : ২০২৫-এ পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে পৌড়া অষ্টমী ও পডুয়ান অষ্টমী ব্রত নিয়ম নিয়ে আজকের বিস্তারিত প্রতিবেদন অনেকেই এই অষ্টমীকে পৌরা অষ্টমী বা প্রথমা অষ্টমী বলে থাকে। Paura Ashtami 2025 Bengali Festival

“২০২৫-এ পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে ” — গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পড়ুয়া অষ্টমীর গল্প

Parua Astami 2025 Date :- গ্রামবাংলার কৃষক-পরিবারে এখনো রয়ে গেছে একটি মধুর উৎসব-রীতি — ‘পৌড়া অষ্টমী’ বা পরিচিত নাম ‘পড়ুয়া অষ্টমী’। এই দিনটিতে পরিবার-পরিজনের মিলন, আনন্দ ও শুভকামনার ছোঁয়া থাকে। ২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ ছিল ২৫ কার্তিক ১৪৩২ (ইংরেজি তারিখ অনুযায়ী ১২ নভেম্বর ২০২৫) — এই তথ্য মাথায় রেখে গ্রামবাংলার রীতি-আচার, বর্তমান পালন পদ্ধতি ও তার উপলক্ষ নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পড়ুয়া অষ্টমীর অর্থ-উৎপত্তি এবং সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা

পৌড়া অষ্টমী ও পডুয়ান অষ্টমী Parua Astami 2025 Date :- গ্রামবাংলার ঠিক প্রান্তিক অঞ্চলে — বিশেষ করে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ওড়িয়া সিমান্তবর্তী এলাকায় — পড়ুয়া অষ্টমীর রীতি বহু পুরনো।
‘পড়ুয়া’ বা ‘পৌড়া’ শব্দটি মূলত প্রথম সন্তানকে নির্দেশ করে; অর্থাৎ, পরিবারের প্রথম ছেলে অথবা মেয়েকে সু-স্বাস্থ্য, শুভ-ভবিষ্যতের জন্য এই দিনে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়।
এই উৎসব পুরুষ-মহিলা নিরপেক্ষভাবে পালন করা হয় — ছেলে হোক বা মেয়ে, প্রথম সন্তানের জন্য বিশেষ মাহাত্ম্য আছে।

পড়ুয়া অষ্টমীর রীতি ও আচার-অনুষ্ঠান

মূল কার্যকলাপ Parua Astami 2025 Date

  • সকালের গোসল ও হলুদ মেখে নতুন ঘুমসী বা হলুদ রঙের জামা-কাপড় পরা।
  • মায়ের হাত থেকে “মঙ্গল ফোঁটা” দেওয়া — মাথায় ধান-দূর্বা-ফুল দিয়ে প্রদীপ ঠেকিয়ে শুভেচ্ছা হিসেবে দেওয়া হয়।
  • থালায় সাজানো থাকে নতুন ধান, দুর্বা ঘাস, গাঁদা ফুল, গুড়ের পায়েস, রম্ভা-ভাজা, লাল আলু, মুগের দাল ইত্যাদি।
  • পালনের নিয়মে আছে – কেউ মুড়ি বা ভাজা জিনিস সকালে খাবে না, বাড়িতে বিরোধ বা বকাঝকা হবে না।
  • পশুখামারেও পালিত হয় — ছাগল বা গাভীর প্রথম বাছুরকে স্নান করানো হয়, মালা দেওয়া হয়, বাছুরের মাথায় চন্দন ও সিঁদুর লাগানো হয়।

রীতিগত নিষেধ ও বিশেষ উপাদান

  • এই দিনে ‘ভুজা’ বা মুড়ি খাওয়া নিষিদ্ধ।
  • নতুন জামা-কাপড় সাধারণত মাতৃকুল থেকেও আনতে বলা হতো।
  • ওয়াদা রয়েছে — এই রীতি শুধুই আনন্দের নয়, সামাজিক শিক্ষণমূলকও: ছেলে-মেয়ের মধ্যে সমতা, পরিবার-সংস্কৃতির চেতনা বাড়ায়।

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমীর তারিখ এবং সময়সূচি

বাংলা তারিখইংরেজি তারিখমাস ও পাক্ষিকতাতথ্যসূত্র
২৫ কার্তিক ১৪৩২১২ নভেম্বর ২০২৫অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষ অষ্টমীব্যবহারকারী-প্রদান তথ্য

Parua Astami 2025 Date ২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে কেন এই রীতি গুরুত্বপূর্ণ?

এই ধরনের গ্রামীণ উৎসব শুধু একটি ধর্মীয় বা পারিবারিক আচার নয় — এটি স্থানীয় সংস্কৃতির ধারক। ‘পড়ুয়া অষ্টমী’ রীতি থেকে পাওয়া যায়:

  • প্রথম সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ও শুভকামনার প্রকাশ।
  • ছেলে-মেয়ের মধ্যে সমান গুরুত্বের বার্তা।
  • কৃষক-পরিবারে ধান, দুর্বা, মুগ-দাল ইত্যাদির ব্যবহার দিয়ে উৎসব কৃষিভিত্তিক-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত।
  • পারিবারিক মিলন, সামাজিক বন্ধন ও স্থানীয় ঐতিহ্যের সংরক্ষণ।

বর্তমান সময়ে পড়ুয়া অষ্টমীর পালনের চিত্র

বর্তমানে এই রীতি কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে — শহুরে এলাকায় যেমন প্রচলিত নেই, তেমনি গ্রামীণ অংশেও আধুনিকতার ছোঁয়া পড়েছে। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম-কেশিয়াড়ি-নোয়াপাড়া অঞ্চলে আজও এই উৎসব ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়।
নতুন প্রজন্ম হয়তো সামাজিক মিডিয়ায় বেশি যুক্ত — তবুও গ্রামের বাড়িতে মায়ের হাতের মঙ্গল ফোঁটা, নতুন ধান-দূর্বা, পশুখামারে বাছুরের আভা এখনো দেখা যায়।

সারাংশে — “২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে”

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী ১২ নভেম্বর (২৫ কার্তিক ১৪৩২) তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই দিনটি গ্রামবাংলার কৃষক-পরিবারের জন্য আনন্দ আর ভাবনার উৎস। প্রথম সন্তানের সু-স্বাস্থ্য ও শুভ-ভবিষ্যতের জন্য এই উৎসবের রয়েছে গভীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য।

পড়ুয়া অষ্টমীর সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও ঐতিহ্যের গভীর বিশ্লেষণ

গ্রামবাংলার সংস্কৃতিতে ২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে এই প্রশ্নের গুরুত্ব শুধুমাত্র একটি তারিখ জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই উৎসব আসলে বাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজের পারিবারিক একতার প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি বাড়িতে এই দিনে দেখা যায় প্রথম সন্তানকে কেন্দ্র করে বিশেষ পূজা, নতুন পোশাক পরানো, ধান-দূর্বা-গুড়ের ব্যবহার এবং মঙ্গল কামনার নানা আচার। সময়ের সাথে সাথে উৎসবের ধরন বদলালেও, পড়ুয়া অষ্টমীর মূল আত্মা আজও অবিকল রয়ে গেছে। এই রীতির মাধ্যমে গ্রামের মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি ও বিশ্বাস ধরে রাখে।

বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী পৌড়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ কবে ২০২৫ সালে—এই প্রশ্নই অনেকের মনে জাগে প্রতি বছর। ২৫ কার্তিক ১৪৩২ তারিখের এই দিনটি প্রকৃতির পরিবর্তনের এক বিশেষ সময়। নতুন ধান উঠছে, মাঠে কৃষক ব্যস্ত, আর ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। এই সময়েই প্রথম সন্তানকে কেন্দ্র করে চলে মায়ের মঙ্গল কামনার আয়োজন। একদিকে ধর্মীয় আবেগ, অন্যদিকে পারিবারিক ভালোবাসা—দুইয়ের মেলবন্ধনই পড়ুয়া অষ্টমীকে করে তুলেছে অনন্য।

২০২৫ সালে প্রথমা অষ্টমী বাংলায় কবে পড়েছে—এই কথাটিও অনেকেই সার্চ করেন, কারণ গ্রামবাংলায় অনেক জায়গায় পড়ুয়া অষ্টমীকে ‘প্রথমা অষ্টমী’ বলেও ডাকা হয়। দুই নামেই একই উৎসবের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এটি সাধারণত দুর্গাপূজার পর এবং কৃষ্ণ অষ্টমী তিথিতে পালিত হয়। পরিবারে প্রথম জন্ম নেওয়া সন্তানকে এই দিনে আশীর্বাদ করা হয়, যেন তার জীবনে শুভ শক্তি ও শান্তি আসে।

বর্তমানে পৌড়া অষ্টমী ২০২৫ তারিখ জানতে অনেকে মোবাইল ক্যালেন্ডার ও পঞ্জিকা ব্যবহার করেন, কিন্তু গ্রামে এখনো প্রবীণরাই বলেন কখন পড়ুয়া অষ্টমী পড়বে। তারা চন্দ্রপঞ্জিকার তিথি দেখে নির্ধারণ করেন উৎসবের দিন। এই ঐতিহ্যগত নির্ভরশীলতা দেখায়, গ্রামীণ সমাজে কেমনভাবে প্রাচীন সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস আজও টিকে আছে।

পৌড়া অষ্টমী ২০২৫ সালে কবে পালিত হয় এই প্রশ্নের উত্তর জানার পাশাপাশি এর সামাজিক গুরুত্বও বোঝা জরুরি। পড়ুয়া অষ্টমী পরিবারে মায়ের ভূমিকার গুরুত্ব বাড়ায়। মায়ের হাতের ফোঁটা, সন্তানের কপালে মঙ্গল চিহ্ন—এসবের মধ্যে লুকিয়ে আছে সন্তান এবং মায়ের সম্পর্কের গভীরতা। এই উৎসব তাই কেবল একটি তারিখ নয়, বরং বাংলার পরিবার-সংস্কৃতির প্রতীক।

২০২৫ সালের পড়ুয়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ জানলে বোঝা যায় কিভাবে এই উৎসব ঋতুচক্র ও কৃষিকাজের সাথে সংযুক্ত। কার্তিক মাসের শেষে যখন ধান কাটা শুরু হয়, তখনই এই উৎসব পালন করা হয়। এটি একদিকে ফসলের আশীর্বাদ প্রার্থনা, অন্যদিকে পরিবারের শুভ কামনার প্রতীক। এমনকি গবাদি পশুকেও এই দিনে স্নান করিয়ে ফুলের মালা পরানো হয়—এ যেন প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।

বিজ্ঞাপন

বাংলার ইতিহাসে দেখা যায়, পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়া অষ্টমী ২০২৫ কেবল একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি সমাজের সমতা ও মানবিক মূল্যবোধের বার্তা দেয়। এখানে ছেলে বা মেয়ে, উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। পরিবারে প্রথম সন্তান যেই হোক না কেন, তাকে কেন্দ্র করেই পালিত হয় এই পূজা। সমাজে নারী-পুরুষের সমান মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও এই উৎসব আজ প্রাসঙ্গিক।

শেষ পর্যন্ত বলা যায়, ২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে জানার মধ্যেই লুকিয়ে আছে বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অপরিসীম সৌন্দর্য। এই রীতির মধ্যে আছে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও আত্মিক আনন্দের ছোঁয়া। আজকের প্রজন্ম ডিজিটাল যুগে থেকেও যখন এই উৎসবের কথা জানে ও সার্চ করে, তখন স্পষ্ট বোঝা যায়—পড়ুয়া অষ্টমী এখনো জীবন্ত ঐতিহ্য, যা বাংলার মাটির সঙ্গে অটুট বন্ধনে যুক্ত।


উল্লেখ করতে পারেন যে, Poura Ashtami মূলত Medinipur (মেদিনীপুর) ও রার্হ অঞ্চলে বেশ প্রচলিত।
উদাহরণস্বরূপ:

এতে Oriya (ওড়িশার) প্রভাব রয়েছে– “পড়ুয়ান অষ্টমী” বা “পডুয়ান অষ্টমী” নামে অভিহিত।

পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলা-জেলায়ও এই উৎসব পালিত হলেও রীতি একটু পরিবর্তিত হতে পারে।

উৎসবের সময় ও তিথি-র বিষয়
আপনি আপনার পোস্টে সময় উল্লেখ করেছেন—এখানে একটু বিস্তারিত দিতে পারেন যেমন:

এই উৎসব হয় অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষ অষ্টমীতে (অষ্টম তিথিতে)।

এই কারণে বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখ বারো কোঠায় ভিন্ন হতে পারে—লোকাল পঞ্চাঙ্ক দেখে নিশ্চিত হওয়া ভালো।

উৎসবের বিশেষ রীতি-আচার ও উপকরণ
কিছু বিশেষ রীতি উল্লেখ করলে পাঠকদের কাছে আকর্ষণ বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ:

ফল, খাঁটা চাল, ছুলসিকাঠের মালা বা তুলসী গুচ্ছ, গন্ধরাজ পাতা, গরুর প্রথম বাছুরের গোবর দিয়ে তৈরি ছোট ছোট দেবদেবী প্রতিমা– এসব উপকরণ উৎসবের মধ্যে ব্যবহৃত হয়।

নতুন জামাকাপড় (বিশেষত হলুদ রঙের), মেদিনীপুরে “লাল বা কালো ঘুমসী” উপহার দেওয়া হয়।

এই দিন কিছু স্থানীয়ভাবে তো ‘মুরি/ভুজা’ খাওয়া নিষিদ্ধ থাকায়, সেসব বিষয়ও উল্লেখ করা যায়।

পৌড়া অষ্টমী, পডুয়ান অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অর্থ
এই উৎসব শুধুই পারিবারিক উৎসব নয়, সামাজিক অর্থও রয়েছে—যেমনঃ

বড় মেয়ের/ছেলের শুভ-কামনায় বা পরিবারের প্রথম সন্তানকে সম্মান জানিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়।

পারিবারিক বন্ধন মজবুত হয়—সকল সদস্য একসাথে রীতিমতো আয়োজন করে, উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে।

এছাড়া, স্থানীয় সংস্কৃতিতে এই উৎসব একটি পরিচিত চিহ্ন হিসেবে থেকেছে—উৎসবের সময়-পরবর্তী সামাজিক গুটিকয় অংশ যেমন পিঠাপুলি, অতিথি আপ্যায়ন বাড়ে।

২০২৫ সালে অগ্রহায়ণ মাসের শুরু-শেষ ও স্থানীয় পঞ্চাঙ্ক অনুযায়ী আপনার জেলার বা এলাকায় ঠিক কোন দিনে উৎসব হবে—পাঠককে পরবর্তী বছর বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় সহায়ক হবে।

কোথায় ও কখন পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী হয়ে থাকে – মেদিনীপুর, সুন্দরবন আশেপাশ, গ্রামের যেকোনো পরিবারে পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী উৎসব পালিত হয়।

পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী কিভাবে অংশ নেওয়া যায় / কীভাবে আয়োজন করতে হবে – সাধারণ উপকরণ তালিকা, রীতি-নিষিদ্ধ বিষয় (যেমন ভুজা না খাওয়ার কথা) সম্বলিত নির্দেশনা।
পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী কীভাবে পালন করবেন ও কীভাবে অংশগ্রহণ করা যায়
বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী পালন করা হয় এক বিশেষ নিয়মে, যা মূলত দেবী পূজা ও ব্রতসংক্রান্ত। এই দিনে মহিলারা বিশেষভাবে ব্রত পালন করেন পরিবারের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনায়। ভোরবেলায় গঙ্গা বা পবিত্র জলে স্নান করা দিয়ে দিনটি শুরু হয়। স্নানের পর পরিশুদ্ধ পোশাক পরিধান করে দেবীর বেদি সাজাতে হয়। বেদিতে কলস বসিয়ে তার উপর নারকেল, আমপাতা, ফুল, ধূপ, প্রদীপ, সিঁদুর, চন্দন ও পুষ্প দিয়ে সাজানো হয়। এই সব উপকরণই পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী পালনের জন্য অপরিহার্য। পূজার সময় দেবীর মন্ত্রপাঠ, আরতি ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে আচার শুরু হয়। অনেক স্থানে বয়স্ক মহিলারা তরুণীদের ব্রতের নিয়ম শেখান, যাতে ঐতিহ্যটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকে থাকে।

এই দিনে কিছু রীতি-নিষেধও মানা অত্যন্ত জরুরি। যেমন — পডুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী-র দিনে কেউই ভুজা (ভাজা খাবার), মাছ, মাংস, ডিম বা পেঁয়াজ-রসুন জাতীয় খাবার গ্রহণ করেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরামিষ, ফল, দুধ ও প্রসাদ হিসেবে তৈরি খাবার খাওয়া হয়। অনেকেই এই দিনটিতে উপোস থেকে কেবলমাত্র সন্ধ্যায় প্রসাদ গ্রহণ করেন। এছাড়াও, পূজার আগে ও পরে অশুভ কাজ, কলহ, বা অশালীন আচরণ পরিহার করতে বলা হয়। বিশ্বাস করা হয়, যে ব্যক্তি নিষ্ঠাভরে এই নিয়ম পালন করেন, দেবী তার পরিবারকে অশুভ থেকে রক্ষা করেন এবং জীবনকে করেন মঙ্গলময়।

অংশগ্রহণ করতে চাইলে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিজে বা পরিবারের প্রবীণদের নির্দেশনা মেনে পূজার আয়োজন করা। বর্তমানে শহরাঞ্চলেও Poura or Poruan Astami পালন করা হয় সমাজভিত্তিক বা মন্দিরে সম্মিলিতভাবে। এতে অংশ নেওয়া যায় সকালে স্নান করে সাদা বা লাল পোশাক পরে, সঙ্গে ফুল, ফল ও প্রসাদ নিয়ে। পূজার শেষে দেবীর চরণে প্রণাম জানিয়ে ভক্তরা পরিবার ও সমাজের মঙ্গল কামনা করেন। এভাবেই পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি হয়ে ওঠে এক আন্তরিক আধ্যাত্মিক সাধনা, যা মানুষকে ভক্তি, শুদ্ধতা ও ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে।

পরিবার ও শিশুদের জন্য বিশেষ দিক – শিশুদের অংশগ্রহণ, শিশুদের পক্ষে কি চাওয়া হয়, নতুন জামাকাপড় কেনা ইত্যাদি।


গ্রামীণ বাংলায় পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী

বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হল পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী। অনেক অঞ্চলে এই দিনটিকে পডুয়ান অষ্টমী নামেও ডাকা হয়। প্রাচীন কাল থেকেই Poura or Poruan Astami বাংলার হিন্দু পরিবারের এক বিশেষ দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই দিনে দেবীর পূজা, ব্রত পালন, পবিত্র স্নান এবং আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মানুষ তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশ করে। বিশেষ করে গ্রামীণ বাংলায় এই পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী দিনটিতে মহিলারা উপোস করে দেবীর আরাধনা করেন পরিবারের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য। এটি শুধু পূজার দিন নয়, এক গভীর আধ্যাত্মিক অনুভূতির প্রকাশ যেখানে প্রার্থনার সাথে মিশে থাকে মানুষের ভক্তি ও ঐতিহ্যের আবেগ।

পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী—নামের ভিন্নতা

পডুয়ান অষ্টমী, পড়ুয়ান অষ্টমী বা পৌড়া অষ্টমী—নামের ভিন্নতা থাকলেও এই উৎসবের মূল তাৎপর্য একটাই। বাংলার বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে নদীয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও হুগলি অঞ্চলে এই Poura or Poruan Astami পালিত হয় বিশাল উৎসাহে। এই দিনে সকালে গঙ্গাস্নান, দেবী পূজা ও ব্রত পালনের মাধ্যমে শুভ সূচনা হয়। অনেকে বলেন, এই দিনে পূজা করলে সংসার থেকে অশুভ শক্তি দূর হয় ও ঘরে আসে শান্তি। ধর্মবিশ্বাসের পাশাপাশি সামাজিক মিলনের এক অনন্য সুযোগ তৈরি করে পৌড়া অষ্টমী। গ্রামের মহিলারা নতুন শাড়ি পরে, বাড়িতে আলপনা দেয়, এবং একত্রিত হয়ে দেবীর নাম জপ করে। এভাবেই পড়ুয়ান অষ্টমী শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ঐক্যের উৎসব হিসেবেও পরিচিত হয়ে উঠেছে।

পৌড়া অষ্টমী, পডুয়ান অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী তার ঐতিহ্য

আজকের আধুনিক যুগেও পৌড়া অষ্টমী, পডুয়ান অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। Poura or Poruan Astami-র দিনে অনেক এলাকায় আয়োজিত হয় গ্রামীণ মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, পল্লিগীতি ও কীর্তন। এটি একদিকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, অন্যদিকে বাংলার লোকসংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। এই দিনটিতে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয় ভক্তিভরে দেবীর পূজা দেখতে, প্রসাদ বিতরণে অংশ নিতে এবং সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনা করতে। বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই পৌড়া অষ্টমী বা পড়ুয়ান অষ্টমী উৎসব আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। আজও এটি বাংলার মানুষের মনে শ্রদ্ধা, ভক্তি ও মিলনের প্রতীক হয়ে আছে।

প্রশ্নোত্তর (FAQ)

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কবে পড়েছে?

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী পড়েছে ১২ নভেম্বর, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী ২৫ কার্তিক ১৪৩২ তারিখে। এই দিনটি অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয়।

পড়ুয়া অষ্টমী আসলে কী উৎসব?

পড়ুয়া অষ্টমী গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক উৎসব, যেখানে পরিবারের প্রথম সন্তানকে কেন্দ্র করে মঙ্গল কামনা ও আশীর্বাদ দেওয়া হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে শুভ কামনা প্রকাশ করেন।

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী কোন দিন ছিল?

২০২৫ সালে পড়ুয়া অষ্টমী বুধবার দিন পড়েছিল। এই দিনে গ্রামের ঘরে ঘরে মঙ্গল ফোঁটা, ধান-দূর্বা ও পায়েসের আয়োজন করা হয়।

পড়ুয়া অষ্টমীর বাংলা তারিখ কবে ২০২৫ সালে?

বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৫ সালের পড়ুয়া অষ্টমীর তারিখ ছিল ২৫ কার্তিক ১৪৩২। এই সময়টি শারদীয় উৎসবের পরবর্তী সময়ে, যখন গ্রামীণ বাংলায় নতুন ধান ওঠার মৌসুম শুরু হয়।

পড়ুয়া অষ্টমী কেন পালন করা হয়?

পড়ুয়া অষ্টমী মূলত পরিবারের প্রথম সন্তান ও তার মঙ্গল কামনায় পালন করা হয়। এই রীতি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে, যা পারিবারিক বন্ধন এবং সামাজিক ঐক্যের প্রতীক।

বর্তমানে পড়ুয়া অষ্টমী কেমনভাবে পালিত হয়?

বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে পড়ুয়া অষ্টমী আগের মতোই পালন করা হয়, যদিও শহরে এর প্রচলন কমে গেছে। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর ও আশেপাশের এলাকায় এই উৎসব আজও সমান উৎসাহে পালিত হয়।

পড়ুয়া অষ্টমীতে কী কী নিয়ম মানা হয়?

এই দিনে মুড়ি বা ভাজা খাবার খাওয়া নিষেধ, সকালবেলা স্নান সেরে নতুন পোশাক পরা হয় এবং মায়ের হাত থেকে মঙ্গল ফোঁটা নেওয়া হয়। পরিবারে শান্তি ও সৌভাগ্যের জন্য এই নিয়মগুলো মানা হয়।

২০২৫ সালের পড়ুয়া অষ্টমী কোন মাসে পালিত হয়েছে?

২০২৫ সালের পড়ুয়া অষ্টমী পালিত হয়েছে নভেম্বর মাসে, অর্থাৎ বাংলা পঞ্জিকায় কার্তিক মাসে। এই সময় গ্রামবাংলায় উৎসবের আবহে ভরে ওঠে ঘরবাড়ি।

Table of Contents

Leave a Comment

রাশিফল লটারি রেজাল্ট পূজার দিন বিয়ের লগ্ন পূর্ণিমা আমাবস্যা ছুটি ঘোষণা শুভ দিন ফর্ম মক টেস্ট কুইজ নোটস আবহাওয়া সোনা দাম গ্যাস দাম
⬅️ ➡️