নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি প্রতিদিন শুরু পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, আগামী বিধানসভা ভোটে তাঁর দলের আসন সংখ্যা বাড়বে। এতটা আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য তিনি অতীতে খুব একটা করেননি। সাধারণত তিনি জয়ের ডাক দেন, কিন্তু এবার সরাসরি সংখ্যার বৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী। রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা—কোন কারণে এই দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী?
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি নিয়ে মমতার আত্মবিশ্বাস
রাজনীতিতে মমতার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং দলের শক্তিশালী সংগঠনের জোরে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভোট এখনও প্রায় সাত মাস দূরে, কিন্তু এখন থেকেই তিনি দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে চাইছেন।
তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি শুধুমাত্র দলের ভরসা নয়, বরং জনগণের উন্নয়নমূলক কাজই বড় ভিত্তি। মমতা জানিয়েছেন, “মানুষের আশীর্বাদেই তৃণমূল কংগ্রেস দল তৈরি হয়েছে, আর আগামী নির্বাচনে আপনাদের আসন আরও বাড়বে।”
কেন মনে করছেন বাড়বে আসন সংখ্যা?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেতারা সাধারণত আসন বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেন তিনটি কারণে—
- জনমানসে আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া।
- কর্মীবাহিনীর মনোবল বাড়ানো ও চাপ সৃষ্টি।
- বিরোধীদের মনোবলে আঘাত করা।
এই তিনটি লক্ষ্যই এবার মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে স্পষ্ট।
২০২১ সালের ফলাফল থেকে শুরু
- ২০২১ সালে তৃণমূল পেয়েছিল ২১৫টি আসন।
- পরে উপনির্বাচন ও ভাঙনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১৯-এ।
- অন্যদিকে বিজেপির ৭৭ আসন থেকে নেমে আসে ৭৫-এ।
- সময়ের সঙ্গে তৃণমূল দলে যোগ দেন বিরোধী শিবিরের একাধিক বিধায়ক।
এই পটভূমিতেই মমতার দাবি, আগামী ভোটে আরও বেশি আসন যোগ হবে।
সরকারি পরিষেবা তৃণমূলের মূল হাতিয়ার
তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সরকারি প্রকল্পের কোনও না কোনও সুবিধাভোগী রয়েছেন। কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে ছাত্র-যুবদের নানা প্রকল্প—সবই তৃণমূলের ভোটভিত্তি শক্ত করেছে।
তাছাড়া, মহিলা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমর্থনও মমতার অন্যতম ভরসা। সংগঠনগত দিক থেকেও বুথ স্তরে এখনো অপ্রতিরোধ্য অবস্থানে রয়েছে তৃণমূল।
বিজেপির চ্যালেঞ্জ এবং বাস্তবতা
বিজেপি রাজ্যে মেরুকরণের চেষ্টা করলেও তৃণমূলের সরকারি পরিষেবা ও শক্তিশালী সংগঠন এখনো বিরোধীদের ছাপিয়ে রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এটাই তৃণমূলকে বড় সুবিধা দিচ্ছে।
আসন্ন ভোটে তৃণমূলের সম্ভাবনা: সংক্ষেপে টেবিলে
| বিষয় | তৃণমূল | বিজেপি |
|---|---|---|
| ২০২১ সালের আসন | ২১৫ | ৭৭ |
| উপনির্বাচনের পর | ২১৯ | ৭৫ |
| সংগঠনগত জোর | শক্তিশালী বুথ সংগঠন | দুর্বল বুথ সংগঠন |
| সরকারি পরিষেবা | প্রায় প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে গেছে | সীমিত প্রভাব |
সব মিলিয়ে বলা যায়, বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি নিয়ে মমতার আত্মবিশ্বাস আসলে সরকারি পরিষেবা, মহিলা-সংখ্যালঘুদের সমর্থন ও শক্তিশালী বুথ সংগঠনের ওপর নির্ভর করছে। এখন দেখার বিষয়, এই আত্মবিশ্বাস বাস্তবে কতটা ফল দেয়।
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত আত্মবিশ্বাসী কেন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, সরকারি পরিষেবা প্রতিটি পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। পাশাপাশি মহিলা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শক্ত সমর্থন এবং বুথস্তরে শক্তিশালী সংগঠন তাঁকে আত্মবিশ্বাসী করেছে।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কতটি আসন পেয়েছিল?
২০২১ সালে তৃণমূল পেয়েছিল ২১৫ আসন। উপনির্বাচন ও ভাঙনের ফলে পরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১৯-এ।
বিজেপির তুলনায় তৃণমূল কেন এগিয়ে রয়েছে?
বিজেপি রাজ্যে মেরুকরণের চেষ্টা করলেও তৃণমূলের সরকারি পরিষেবা ও বুথস্তরের সংগঠন অনেক বেশি শক্তিশালী। এ কারণে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারি প্রকল্প কতটা প্রভাব ফেলতে পারে ভোটে?
কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, ছাত্র-যুব প্রকল্পের মতো সরকারি পরিষেবা প্রায় প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে গেছে। ফলে ভোটের সময় এগুলো তৃণমূলের বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
আসন্ন বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কত আসন বাড়াতে পারে?
ঠিক কত আসন বাড়বে তা এখনই বলা কঠিন। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সংগঠন ও সরকারি পরিষেবার কারণে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধি নিশ্চিতভাবেই সম্ভব।


























