
নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: পবিত্র রথযাত্রার আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নিল আতঙ্কে। পুরীর রাজপ্রাসাদের সামনে ঘটে গেল এমন এক দুর্ঘটনা, যা শিউরে তুলেছে গোটা দেশকে। হাজার হাজার পুণ্যার্থীর উপস্থিতিতে একের পর এক মানুষ পড়ে যাচ্ছেন, আহত হচ্ছেন, আর হাসপাতালের বেডে শুয়ে পুণ্যযাত্রার স্মৃতি আঁকড়ে ধরছেন।
এই ঘটনাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ‘পশ্চিমবঙ্গ রথযাত্রা ২০২৫’-এও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।
পুরীতে রথযাত্রার দিন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, আহত বহু পুণ্যার্থী
পুরীতে রথযাত্রা ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল চরমে। কিন্তু শ্রীনাহার অর্থাৎ রাজপ্রাসাদের সামনে আচমকাই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। প্রচণ্ড ভিড়ে অনেকেই পড়ে যান, ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হন অন্তত ৪০ জন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকাজুড়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে যখন জগন্নাথের ঐতিহ্যবাহী “পাহাড়ি” অনুষ্ঠান চলছিল। গজপতি রাজপরিবারের প্রাসাদের সামনেই জমা হচ্ছিল হাজার হাজার ভক্ত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও, অতিরিক্ত ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে।
রথযাত্রার ইতিহাসেও আছে এমনই দুঃখজনক ঘটনার নজির
‘পশ্চিমবঙ্গ রথযাত্রা ২০২৫’ এর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই ধরনের ঘটনার থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এর আগেও ২০২৪ সালের রথযাত্রার সময় পুরীতে ভিড়ের চাপে এক পুণ্যার্থীর মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিল।
এবছর প্রশাসন আরও কড়াভাবে প্রস্তুত ছিল, কিন্তু মানুষের ঢল এতটাই ছিল যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বলভদ্রের তালধ্বজ রথ টানার সময় হঠাৎই হাজার হাজার মানুষ রশি ছুঁতে ছুটে যান। এই সময় রথটি গুন্ডিচা মন্দিরের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এমন সময়ই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। হুড়োহুড়ির চাপে অনেকে পড়ে যান এবং আহত হন।
আহতদের অবস্থা ও প্রশাসনের তৎপরতা
ঘটনার পরপরই আহতদের পুরী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিডিএমও সূত্রে জানা গেছে, সকলের চিকিৎসার ব্যবস্থা দ্রুত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর না থাকলেও, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এই ধরনের ঘটনার পর প্রশাসন এবং পুলিশকে ভবিষ্যতে আরও সক্রিয় হতে হবে। ভিড়ের গতি ও দিক নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন।
‘পশ্চিমবঙ্গ রথযাত্রা ২০২৫’ – প্রস্তুতির সময় এখনই
যেহেতু পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রা খুবই জনপ্রিয়, তাই এই প্রতিবেদন সবার জন্য একটি সতর্ক বার্তা।
- ভিড় নিয়ন্ত্রণ
- পর্যাপ্ত মেডিক্যাল ক্যাম্প
- স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ
এই সব বিষয়েই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। শুধু প্রশাসনের উপর নির্ভর করলে হবে না, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একনজরে (টেবিল আকারে)
বিষয়ের নাম | বিস্তারিত তথ্য |
---|---|
দুর্ঘটনার স্থান | শ্রীনাহার (পুরীর রাজপ্রাসাদ সংলগ্ন এলাকা) |
আহতের সংখ্যা | ৪০ জনের বেশি |
রথের নাম | বলভদ্রের তালধ্বজ রথ |
ঘটনার সময় | “পাহাড়ি” অনুষ্ঠান চলাকালীন |
চিকিৎসা চলছে | পুরী মেডিক্যাল কলেজে |
পূর্ববর্তী বছরেও দুর্ঘটনা | ২০২৪ সালে এক পুণ্যার্থীর মৃত্যু |
প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন (FAQ)
রথযাত্রার সময় পুরীতে কী দুর্ঘটনা ঘটেছে?
পুরীর শ্রীনাহার বা রাজপ্রাসাদের সামনে রথযাত্রার দিন প্রচণ্ড ভিড়ে পড়ে গিয়ে অন্তত ৪০ জন পুণ্যার্থী গুরুতর আহত হন। বিশৃঙ্খলা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে অনেকেই দমবন্ধের পরিস্থিতিতে পড়েন।
কবে ও কোথায় এই দুর্ঘটনা ঘটে?
এই ঘটনা ঘটে ২০২৫ সালের রথযাত্রা উপলক্ষে, পুরীর রাজপ্রাসাদের সামনে, “পাহাড়ি” অনুষ্ঠান চলাকালীন।
আহতদের কোথায় ভর্তি করা হয়েছে?
আহতদের পুরী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সিডিএমও-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সকলের চিকিৎসা চলছে।
কি কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটল?
রথযাত্রায় হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে রশি ধরতে ছুটে যান। এই অতিরিক্ত ভিড়ে শুরু হয় হুড়োহুড়ি, ফলে ধাক্কাধাক্কিতে অনেকেই মাটিতে পড়ে যান এবং আহত হন।
এর আগে কি কখনও এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে?
হ্যাঁ, ২০২৪ সালের রথযাত্রাতেও এক পুণ্যার্থীর মৃত্যু ঘটেছিল ভিড়ের চাপে। সেবারও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয়েছিল প্রশাসনকে।
প্রশাসনের তরফ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
প্রশাসন আগাম প্রস্তুতি নিয়েছিল, তবে এত বিশাল ভিড়ের সামনে তা পর্যাপ্ত ছিল না। তবে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এবার কতজন ভক্ত উপস্থিত ছিলেন পুরীর রথযাত্রায়?
লক্ষ লক্ষ মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। বিশেষ করে বলভদ্রের রথ টানার সময় হাজার হাজার মানুষ রশির কাছে ভিড় করেন, যেখান থেকে দুর্ঘটনা শুরু হয়।
‘পশ্চিমবঙ্গ রথযাত্রা ২০২৫’-এ এই ঘটনার প্রভাব পড়বে কি?
এই ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের রথযাত্রা উদযাপনে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়। প্রশাসনকে আরও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে কী করা উচিত?
ভিড় নিয়ন্ত্রণের আধুনিক প্রযুক্তি, প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক, ও পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা দরকার। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
কোথা থেকে তথ্য জানা গেছে?
এই প্রতিবেদন সরকারি ও হাসপাতাল সূত্রের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনও তথ্য কল্পনা থেকে লেখা হয়নি।