দক্ষিণবঙ্গে ফের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা! আজ ছয় জেলায় ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে হু়শিয়ারি আবহাওয়া দপ্তরের।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: ফের দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি
প্রতিদিন শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতের ধারা আরও জোরদার হতে চলেছে আজ সোমবার থেকে। বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগর থেকে উঠে আসা জলীয় বাষ্প এবং শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের কারণে দক্ষিণবঙ্গের আকাশে ফের একবার নিম্নচাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে আজ ৬টি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।
আজ ফের নিম্নচাপ, দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে
দক্ষিণবঙ্গের আকাশে প্রায় ৬ কিমি উপরের স্তরে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্ত ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে আজ সোমবার নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ফলে “দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টি পূর্বাভাস” নিয়ে আজ সকাল থেকেই সতর্কবার্তা জারি হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে।
কোন কোন জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে আজ?
আজকের দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ন দক্ষিণবঙ্গের ৬টি জেলার বাসিন্দাদের জন্য। নিচের তালিকায় জেলাগুলি দেওয়া হলো, যেখানে আজ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে:
- পুরুলিয়া
- বাঁকুড়া
- পূর্ব মেদিনীপুর
- পশ্চিম মেদিনীপুর
- ঝাড়গ্রাম
- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
এই জেলাগুলিতে দিনের বেশিরভাগ সময় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
অন্যান্য জেলাগুলির অবস্থাও কি গুরুতর?
দক্ষিণের বাকি ৯টি জেলায় আজ মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ এবং ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
আগামীকালও থাকবে বৃষ্টির পূর্বাভাস?
হ্যাঁ, মঙ্গলবারও বৃষ্টি চলবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও আগামীকাল বৃষ্টির তীব্রতা বজায় থাকবে।
টেবিল: আজ ও আগামীকালের সম্ভাব্য বৃষ্টিপ্রবণ জেলা তালিকা
তারিখ | দক্ষিণবঙ্গ | উত্তরবঙ্গ |
---|---|---|
সোমবার | পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব-মেদিনীপুর, পশ্চিম-মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা | জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার |
মঙ্গলবার | বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান | দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার |
কেন এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর এই বৃষ্টিকে?
পশ্চিমবঙ্গের বৃষ্টিপ্রবণ এলাকাগুলিতে বর্ষার শুরু থেকেই অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প জমে উঠছে। এর ফলে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে আসা বাষ্প সরাসরি দক্ষিণবঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে, যা দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টি পূর্বাভাসকে আরও জোরালো করছে।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি
- সাধারণ মানুষকে খোলা জায়গায় না যাওয়ার পরামর্শ
- জরুরি প্রয়োজনে ছাতা ও রেইনকোট ব্যবহার করার অনুরোধ
- নদী তীরবর্তী এলাকা এবং জলাভূমিতে সতর্কতা অবলম্বন
উপসংহার
প্রাকৃতিক পরিবর্তনের এই সময়ে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়তে পারে। ঘূর্ণাবর্তের জেরে একের পর এক নিম্নচাপ তৈরির ফলে “দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টি পূর্বাভাস” এখন রোজকার বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি দপ্তর ও আবহাওয়া অফিস থেকে বারবার সতর্কতা জারি করা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী আমাদের সকলের উচিত সাবধান থাকা এবং পরিস্থিতির মোকাবিলা করা।
প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন আবহাওয়া সম্পর্কে (FAQ)
দক্ষিণবঙ্গে আজ কোথায় ভারী বৃষ্টি হবে?
আজ সোমবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কী কারণে এই বৃষ্টি হচ্ছে?
বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প এবং ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৬ কিমি ওপরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের কারণে দক্ষিণবঙ্গে একটি নতুন নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
শুধু দক্ষিণবঙ্গেই বৃষ্টি হবে?
না, উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি চলছে। আজ জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। আগামীকাল দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারেও বৃষ্টি চলবে।
বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়ো হাওয়া কবে হতে পারে?
আজ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আগামীকাল কী বৃষ্টির পরিমাণ কমবে?
আগামীকাল দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তুলনামূলকভাবে তা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
বৃষ্টির জন্য কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
খোলা জায়গায় না যাওয়া, বিদ্যুতের খুঁটি বা বড় গাছের নিচে দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকা এবং প্রয়োজনে রেইনকোট বা ছাতা ব্যবহার করা উচিত।
এই বৃষ্টির ফলে কোন কোন ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে?
পরিবহন ব্যবস্থা, কৃষি কার্যকলাপ এবং খোলা জায়গায় চলমান নির্মাণকাজ এই বৃষ্টির ফলে সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
এই নিম্নচাপ কতদিন স্থায়ী হবে?
এই নিম্নচাপের প্রভাব আগামী দু-তিন দিন অবধি টিকতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।