নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : মমতার কর্মশ্রী প্রকল্প প্রতিদিন গ্রামীণ বাংলার হাজারো পরিবারের মুখে হাসি ফিরিয়ে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজ স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে শুরু হওয়া এই প্রকল্প এখন জেলাজুড়ে কর্মসংস্থানের নতুন ভরসা হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছেন। মজুরির টাকাও জমা হচ্ছে সরাসরি শ্রমিকদের হাতে, ফলে চাঙা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি।
মমতার কর্মশ্রী প্রকল্পে কাজের রেকর্ড
হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে কেন্দ্রীয় সরকার পিছু হটেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শুরু হওয়া কর্মশ্রী প্রকল্পে চলতি অর্থবছরেই তৈরি হয়েছে ১৫ কোটি ৮৭ লক্ষের বেশি কর্মদিবস।
- এখনও পর্যন্ত কাজ পেয়েছেন ৪৭ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি শ্রমিক।
- শ্রমিকরা গড়ে ৬৪ দিন করে কাজ করেছেন।
- মজুরি বাবদ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা।
কোন জেলায় কত কাজ তৈরি হয়েছে
প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলাই এই মুহূর্তে সবার আগে। এরপর নদীয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।
জেলা | কর্মদিবস সংখ্যা | কাজ পেয়েছেন (শ্রমিক) | গড় কর্মদিবস |
---|---|---|---|
পূর্ব মেদিনীপুর | ২ কোটি ২৭ লক্ষ ৬৪ হাজার+ | ৬ লক্ষ ১১ হাজার+ | ৫৫ দিন |
নদীয়া | ২ কোটি ২৬ লক্ষ ৪৪ হাজার+ | ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার+ | ৭৭ দিন |
পশ্চিম মেদিনীপুর | তথ্য অনুযায়ী তৃতীয় স্থানে | — | — |
বাঁকুড়া | উল্লেখযোগ্য অবস্থানে | — | — |
দক্ষিণ ২৪ পরগনা | উল্লেখযোগ্য অবস্থানে | — | — |
নদিয়ার সাফল্যের গল্প
শ্রমিকদের গড়ে ৭৭ দিনের কাজ
নদিয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ জানিয়েছেন, কর্মশ্রী প্রকল্প ইতিমধ্যেই গ্রামের অর্থনীতিকে গতি দিয়েছে। তাঁর দাবি, আরও বেশি সংখ্যক জব কার্ড হোল্ডারকে এই প্রকল্পে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন দপ্তর যৌথভাবে কাজ করছে যাতে কারোর হাতে কাজ ফুরিয়ে না যায়।
১০০ দিনের কাজ বনাম কর্মশ্রী
একশো দিনের কাজ বহু বছরের পরিশ্রমে রাজ্যের দরিদ্র পরিবারগুলিকে টিকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অনড় অবস্থান এবং মামলা-মোকদ্দমার কারণে প্রকল্পটি কার্যত বন্ধ। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই শুরু হয়েছে কর্মশ্রী। প্রথমে যেখানে গড়ে ৫০ দিনের কাজের সুযোগের ঘোষণা হয়েছিল, এখন বিভিন্ন জেলায় তা প্রায় ৮০ দিনে পৌঁছেছে।
কর্মশ্রী প্রকল্পের তাৎপর্য
- গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখছে।
- দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলির হাতে কাজ পৌঁছে দিচ্ছে।
- মজুরির টাকা সরাসরি শ্রমিকদের হাতে পৌঁছনোয় মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকা নেই।
- কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হলেও বিকল্প হিসেবে এই প্রকল্প সাধারণ মানুষের আশা বাড়াচ্ছে।
প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন (FAQ)
মমতার কর্মশ্রী প্রকল্প কী?
মমতার কর্মশ্রী প্রকল্প হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি বিকল্প কর্মসংস্থানমূলক উদ্যোগ, যা মূলত কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকার পর চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ পরিবারগুলিকে নিয়মিত কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
মমতার কর্মশ্রী প্রকল্পে কতজন কাজ পেয়েছেন?
এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই সাড়ে চার লক্ষের বেশি মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছেন। শ্রমিকরা গড়ে ৬৪ দিন করে কাজ করেছেন, আর মজুরির টাকা সরাসরি তাঁদের হাতে পৌঁছেছে।
কোন জেলায় কর্মশ্রী প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে?
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। এরপর রয়েছে নদীয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। প্রতিটি জেলায় কাজের সুযোগ এবং গড় কর্মদিবস বাড়ছে।
কর্মশ্রী প্রকল্পে শ্রমিকরা কত দিনের কাজ পাচ্ছেন?
প্রথমে এই প্রকল্পে গড়ে ৫০ দিনের কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় গড় কর্মদিবস বেড়ে প্রায় ৮০ দিনে পৌঁছে গেছে।
কর্মশ্রী প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলছে?
মমতার কর্মশ্রী প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিকে নতুন গতি দিচ্ছে। শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন, ফলে পরিবার চালানোর পাশাপাশি গ্রামীণ বাজারেও ক্রিয়াশীলতা বাড়ছে।