নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: অর্থনৈতিক সমস্যা অনেক সময়ই শিক্ষার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে মাধ্যমিকের পরে যখন পড়াশোনার খরচ বেড়ে যায়, তখন অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী সেই পথে আর এগোতে পারে না শুধুমাত্র টাকার অভাবে। সেই কারণেই এবার সরোজিনী দামোদরণ ফাউন্ডেশন এগিয়ে এসেছে বিদ্যাধন স্কলারশিপ নিয়ে। যারা মাধ্যমিক পাস করেছে এবং উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছে বা হতে চলেছে, তাদের জন্য এই স্কলারশিপ হতে পারে এক বিশাল সহায়তা।
বিদ্যাধন স্কলারশিপ কী এবং কারা পাবে?
বিদ্যাধন স্কলারশিপ হল এমন এক প্রকল্প, যার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দরিদ্র ও মেধাবী পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য করা হয়। এই স্কলারশিপটির আয়োজক সংস্থা হল Sarojini Damodaran Foundation, যারা প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে এই সুবিধা দিয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের বহু পড়ুয়াও ইতিমধ্যে এই স্কলারশিপ পেয়েছে এবং ২০২৫ সালের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।
এই স্কলারশিপের সবচেয়ে বড় দিক হল, যেসব ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্তত ৮০% নম্বর পেয়েছে তারা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় বছরে ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্টাইপেন্ড পেতে পারে। তবে প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে নম্বরের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে, তাদের জন্য ৬৫% নম্বর থাকলেই আবেদন করা যাবে।
স্কলারশিপের টাকা কত?
বিদ্যাধন স্কলারশিপের আওতায় নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীদের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনার সময় বছরে ১০,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। এই টাকা সরাসরি ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় এবং এটি তাদের পড়াশোনার খরচে বড় সাহায্য করে।
এই সুযোগ কেবলমাত্র মাধ্যমিক পাস করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য, যাদের পারিবারিক বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার কম। এর মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে আর্থিক বৈষম্য কিছুটা হলেও দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে।
কী কী যোগ্যতা লাগবে আবেদন করতে?
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার আগে কিছু শর্ত মানতে হবে—
- মাধ্যমিকে কমপক্ষে ৮০% নম্বর থাকতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬৫% নম্বর থাকতে হবে।
- পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে।
- পড়ুয়ার একটি সচল ইমেইল আইডি ও মোবাইল নম্বর থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি ধাপে ধাপে
অনলাইনে আবেদন করার জন্য নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে—
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে।
- “Apply Now” বোতামে ক্লিক করে ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশনের পর লগইন করে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে ফর্ম সাবমিট করতে হবে।
- সাবমিশনের পর একটি “Application Successful” মেসেজ ইমেইলে আসবে।
আবেদন করার সময় লাগবে যেসব ডকুমেন্ট
এখানে একটি টেবিল আকারে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি দেওয়া হল—
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট | উদ্দেশ্য |
---|---|
মাধ্যমিকের মার্কশিট | শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণে |
আয় সার্টিফিকেট | পরিবারের বার্ষিক আয় যাচাইয়ের জন্য |
আধার কার্ড / মাধ্যমিকের অ্যাডমিট | পরিচয় প্রমাণপত্র |
প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ (যদি থাকে) | বিশেষ সুবিধার জন্য প্রয়োজন |
পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি | আবেদনপত্রে যুক্ত করার জন্য |
বৈধ মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি | যোগাযোগ রক্ষার জন্য |
নির্বাচনের প্রক্রিয়া কীভাবে হবে?
এই স্কলারশিপের জন্য যারা আবেদন করবেন, তাদের প্রথমে অনলাইন টেস্ট এবং পরবর্তী পর্যায়ে ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। এই দুটি পর্যায় মিলিয়ে যাদের পারফরম্যান্স ভালো হবে, তাদেরকেই স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে। তাই শুধু আবেদন করলেই চলবে না, প্রস্তুতিও নিতে হবে ভালোভাবে।
আবেদন করার শেষ তারিখ
২০২৫ সালের ২৫ জুলাই এই স্কলারশিপের আবেদন করার শেষ তারিখ। এর পর আর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। তাই যারা মাধ্যমিক পাস করে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন অথচ টাকার অভাবে থেমে যাচ্ছেন, তারা আজই আবেদন করে ফেলুন।
বিদ্যাধন স্কলারশিপ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর (FAQ)
বিদ্যাধন স্কলারশিপ কারা পেতে পারে?
যেসব ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮০% বা তার বেশি নম্বর পেয়েছে এবং পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার মধ্যে, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারে। প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীর জন্য নম্বরের শর্ত কিছুটা শিথিল।
বিদ্যাধন স্কলারশিপে কত টাকা দেওয়া হয়?
এই স্কলারশিপে নির্বাচিত হলে প্রতি বছরে ১০,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়, যা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য।
বিদ্যাধন স্কলারশিপের জন্য কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
আবেদনের জন্য লাগবে মাধ্যমিকের মার্কশিট, আয় সার্টিফিকেট, আধার কার্ড বা অ্যাডমিট, প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ (যদি থাকে), পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং বৈধ মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি।
বিদ্যাধন স্কলারশিপে কীভাবে আবেদন করবো?
প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, তারপর লগইন করে আবেদন ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।
আবেদন করার শেষ তারিখ কবে?
২০২৫ সালের ২৫ জুলাই এই স্কলারশিপের আবেদন করার শেষ দিন। এর পর আর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।