নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ প্রতিদিন শুরু হচ্ছে নতুন জল্পনা নন্দীগ্রামের রাজনীতি আবারও সরগরম। আগামী বিধানসভা ভোট ঘিরে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরে ভেতরে শুরু হয়েছে নতুন পরিকল্পনা। শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এবার প্রার্থী হতে পারেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি দাবি করেছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে নন্দীগ্রামকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে একের পর এক বৈঠকে।
নন্দীগ্রামে রাজীবকে কেন ভাবছে তৃণমূল?
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ নিয়ে শাসকদলের কৌশল একেবারেই অন্যরকম। দলের একাংশের মতে, এখানে স্থানীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। তাই বাইরে থেকে এমন একজনকে প্রার্থী করতে চাইছে নেতৃত্ব, যিনি সাংগঠনিকভাবে পরিচিত হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে নেই।
তিনটি বড় কারণ সামনে এসেছে
- গোষ্ঠীকোন্দল এড়ানো – স্থানীয় দ্বন্দ্ব মেটাতে বাইরের প্রার্থী দেওয়ার কৌশল পুরনো হলেও কার্যকর।
- ওজনদার মুখের অভাব – শুভেন্দুর বিরুদ্ধে লড়ার মতো ভারী নাম তৃণমূলের নেই।
- অভিজ্ঞতার ভরসা – তমলুক লোকসভা এলাকায় পর্যবেক্ষক থাকার সুবাদে রাজীব ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
রাজীবের অতীত রাজনৈতিক যাত্রা
- একসময় ডোমজুড়ে থেকে তৃণমূলের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন।
- ২০২১-এর ভোটের আগে শুভেন্দুর ডাকেই গিয়েছিলেন বিজেপিতে।
- ডোমজুড়ে পদ্মশিবিরের প্রার্থী হলেও হেরে যান।
- পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন।
- ত্রিপুরায় সাংগঠনিক দায়িত্ব ও হাওড়া জেলা পরিষদে মেন্টরের ভূমিকা সামলেছেন।
নন্দীগ্রাম কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
তৃণমূলের ভেতরে অনেকেই বলছেন, নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ দলীয় কৌশলের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু।
- গত লোকসভা ভোটে এই আসনে তৃণমূল প্রায় ৯ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল।
- শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এখনও তুঙ্গে।
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ২০২৬-এ নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন না, এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে দল।
সম্ভাব্য বৈঠকের সময়সূচি
তারিখ (সম্ভাব্য) | বৈঠকের উদ্দেশ্য | গুরুত্ব |
---|---|---|
১৩ – ১৬ সেপ্টেম্বর | নন্দীগ্রাম ব্লকভিত্তিক বৈঠক | প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা |
১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে | বাকি জেলার বৈঠক শেষ | প্রস্তুতি সম্পন্ন করা |
‘ইন্দ্রনীল সেন মডেল’-এর ইঙ্গিত?
রাজনীতির অভিজ্ঞরা বলছেন, রাজীবকে নন্দীগ্রামে দাঁড় করানোর ভাবনা অনেকটা ২০১৪ সালের ‘ইন্দ্রনীল সেন মডেল’-এর মতো। তখন অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছিল ইন্দ্রনীলকে, জেতা ছিল কঠিন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে মন্ত্রী করে পুরস্কৃত করেছিলেন মমতা। এবারও সেই কৌশল খাটাতে পারে তৃণমূল।
রাজীব কী বলছেন?
সরাসরি প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,
“আমায় কেউ কিছু বলেনি। এই প্রথম শুনলাম। নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর খবর পুরোটাই রটনা।”
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, দলের নির্দেশ এলে শেষ পর্যন্ত রাজীবকে নন্দীগ্রামে লড়তে দেখা যেতেই পারে।
সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েই চলেছে। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজীবকে দাঁড় করানো হলে লড়াই নিঃসন্দেহে হবে চ্যালেঞ্জিং। যদিও জয় পাওয়া কঠিন, তবে তৃণমূল হয়তো ভবিষ্যতের জন্য রাজীবকে শক্ত হাতে ব্যবহার করতে চাইছে। এখন দেখার বিষয়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে কোন নাম উঠে আসে।
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬-এ তৃণমূল কাকে প্রার্থী করতে পারে?
তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ মহলে আলোচনা চলছে যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, বিষয়টি কেবলই গুজব।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬-এ লড়বেন?
বর্তমান ইঙ্গিত অনুযায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন না। ২০২১ সালের ভোটে এখানে লড়াই করেছিলেন তিনি, তবে পরাজিত হয়েছিলেন শুভেন্দুর কাছে।
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
নন্দীগ্রাম শুধু একটি বিধানসভা কেন্দ্র নয়, এটি প্রতীকী আসনও। শুভেন্দু অধিকারীর জয় এবং তৃণমূলের হার এখনও আলোচনার কেন্দ্র। তাই দলটি এখানে নতুন কৌশল নিতে চাইছে।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কতটা কাজে আসতে পারে?
রাজীব আগে থেকেই তমলুক লোকসভা এলাকায় কাজ করেছেন, সাংগঠনিক বৈঠক করেছেন এবং স্থানীয় পরিস্থিতি বোঝেন। ফলে নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬-এ তাঁর অভিজ্ঞতা তৃণমূলকে কিছুটা সুবিধা দিতে পারে।
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬-এ তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ কী?
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শুভেন্দু অধিকারীর জনপ্রিয়তা এবং তৃণমূলের স্থানীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এছাড়া গত লোকসভা ভোটের হিসাবে এখানে তৃণমূল প্রায় ৯ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল।
নন্দীগ্রাম নির্বাচন ২০২৬-এ রাজীবকে প্রার্থী করলে তৃণমূলের লাভ কী হতে পারে?
রাজীব স্থানীয়ভাবে গোষ্ঠীকোন্দল থেকে দূরে এবং তাঁর সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তৃণমূল মনে করছে, তিনি লড়াই কঠিন করলেও ভবিষ্যতের জন্য দলে তাঁর অবদানকে কাজে লাগানো যাবে।