নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : Mamata Banerjee on Kolkata Waterlogging কলকাতা শহর আবারও ডুবে গেল বৃষ্টির জলে। টানা নিম্নচাপের বৃষ্টিতে রাতভর অচল হয়ে যায় শহরের স্বাভাবিক ছন্দ। রাস্তাঘাট, বাজার, অফিস সবই জলের তলায়। শহরবাসী এক প্রকার অসহায়। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন জল জমে থাকার পিছনে মূল কারণ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকার কথা। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র অস্বাভাবিক বৃষ্টিই নয়, ডিভিসি জল ছেড়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়েছে।
মমতার অভিযোগ : ডিভিসির জল ছাড়াই বিপর্যয় বাড়ালো
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের বৃষ্টি একেবারেই অস্বাভাবিক ছিল। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা জলে ডুবে যাওয়ার পিছনে প্রধান কারণ ডিভিসির আচমকা জল ছেড়ে দেওয়া। তিনি অভিযোগ করেন—
- ডিভিসি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ড্রেজিং করেনি।
- মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ায় বিপর্যয় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
- উত্তরপ্রদেশ-বিহারের জলও বাংলার দিকে নেমে আসছে, ফলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
তিনি সরাসরি কেন্দ্রের ভূমিকার দিকেই আঙুল তোলেন।
জলমগ্ন কলকাতায় প্রাণহানি, মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণের আশ্বাস
এই দুর্যোগে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হলো বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন—
- মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
- চাকরির ব্যবস্থাও করা হবে, প্রয়োজনে সিইএসসি-কে নির্দেশ দেওয়া হবে।
- তিনি সতর্ক করে দেন, জল জমে থাকা অবস্থায় কেউ যেন রাস্তায় না বেরোয়।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা
“জীবনের বিকল্প কিছু নেই। পুজোর আগে এতগুলো জীবন হারালাম, এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
পুজোর ছুটি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
পুজোর আগে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামলাতে নতুন সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
- সরকারি স্কুলগুলিতে আজ, মঙ্গলবার থেকেই ছুটি ঘোষণা।
- ICSE ও CBSE স্কুলকেও অন্তত ২ দিনের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ।
- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া বা ছুটি দেওয়ার আহ্বান।
- বেসরকারি অফিসগুলিকে পরবর্তী ২ দিন Work From Home করার পরামর্শ।
জলবন্দি কলকাতার অবস্থা এক নজরে (টেবিল)
বিষয় | মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা / অভিযোগ |
---|---|
প্রধান কারণ | অস্বাভাবিক বৃষ্টি + ডিভিসির জলছাড়া |
ক্ষতিপূরণ | বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃতদের পরিবারকে টাকা ও চাকরি |
স্কুল ছুটি | সরকারি স্কুলে আজ থেকে, ICSE/CBSE-তে ২ দিন |
বিশ্ববিদ্যালয় | অনলাইন ক্লাস বা ছুটি রাখার পরামর্শ |
অফিস ব্যবস্থা | ২ দিনের জন্য Work From Home অনুরোধ |
সারসংক্ষেপ
Mamata Banerjee on Kolkata Waterlogging নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য আবারও রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাতের ইঙ্গিত দিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রশাসনিক ব্যর্থতা। শহরবাসী আশা করছে, এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজবে সরকার।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে কলকাতা জলমগ্ন: প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও উত্তর
জলমগ্ন কলকাতার প্রধান কারণ কী?
কলকাতা শহরের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রধান কারণ হলো টানা নিম্নচাপের বৃষ্টি এবং ডিভিসি থেকে জল ছাড়া। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মাইথন ও পাঞ্চেতের জলসহ উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের জল শহরের দিকে এসে পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে প্রশাসনিক ত্রুটি যুক্ত হয়ে বিপর্যয় গভীর হয়েছে।
মৃতদের পরিবারকে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে?
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারকে রাজ্য সরকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে। এছাড়া চাকরির ব্যবস্থা করার কথাও জানানো হয়েছে। সিইএসসি যদি সরাসরি চাকরি দিতে না পারে, রাজ্য সরকার নিশ্চিত করবে পরিবারের পাশে থাকা এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি স্কুলগুলিতে আজ থেকে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ICSE ও CBSE স্কুলগুলিকে অন্তত দুই দিনের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে ক্লাস করার বা ছুটি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদে থাকতে পারে।
অফিসগুলির জন্য কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে?
বেসরকারি অফিসগুলোকে আগামী দুই দিন Work From Home করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে শহরে চলাচল কমানো এবং কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ।
ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি কমাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিভিসির ড্রেজিং দীর্ঘ সময় ধরে হয়নি। ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে নিয়মিত ড্রেজিং এবং জলবন্দি কমানোর কার্যক্রম নেওয়া হবে। এছাড়া শহরের জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের কথাও উল্লেখ করেছেন।