নিজস্ব প্রতিবেদক, Bengal Job Study.in : কলকাতা চেতলা অগ্রণী সংঘ দেবীর চোখ আঁকলেন মমতা মহালয়া মানেই দুর্গাপুজোর ঢাক বাজে, আর এই শুভদিনেই বিভিন্ন প্যান্ডেল উদ্বোধনে হাজির হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবি সন্ধ্যায় চেতলা অগ্রণীর মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজো মণ্ডপে পৌঁছান তিনি। এই অনুষ্ঠানে শুধু মঞ্চে দাঁড়ানো নয়, দুর্গা প্রতিমার চোখও আঁকেন মমতা।
কলকাতা চেতলা অগ্রণী সংঘ দেবীর চোখ আঁকলেন মমতা: চোখ আঁকার মুহূর্ত এবং দর্শকদের বার্তা
মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই যখন দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকা হলো, তখন তিনি উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ববি যা করেছে এবার সেরার সেরা না হয়ে যায়! কত খরচ হয়েছে জানিনা, প্যান্ডেল খুব সুন্দর হয়েছে। দারুণ হয়েছে।” এই মুহূর্তে পুরো মণ্ডপ ভিড়ের মধ্যে এক অদ্ভুত উৎসবমুখর আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।
দর্শকদের জন্য সাবধানী পরামর্শ
মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ দর্শকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দেন, “যারা ঠাকুর দেখতে আসবেন, তারা সাবধানে আসবেন। মণ্ডপে ধাক্কা খাবেন না।” তিনি আরও বলেন, “এই পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে, চার দিন ধরে যা রান্না হয় এখানে সবাই পাড়া প্রতিবেশী খায়, মজা করে। আমার বাড়িতেও এই খাবার যায়।”
নির্মলা মিশ্রের স্মৃতি এবং পুজোর ঐতিহ্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত স্মৃতি স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “এখানে এলেই আমি নির্মলা মিশ্রকে মিস করি। এই পাড়াতেই উনি থাকতেন।” পাশাপাশি পুজোর ইতিহাসেও চোখ রাখেন তিনি। “আগে বাসন্তী পুজো হত। এরপর দুর্গা পুজো। সেটাই আস্তে আস্তে জাতীয় উৎসব হয়ে গেল।”
কলকাতা চেতলা অগ্রণী সংঘ দেবীর চোখ আঁকলেন মমতা: রাজনীতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি জানান, “যে যা খুশি বলুক, আমরা ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে একনম্বর। এরা কেন্দ্রের টাকা দিচ্ছে না। পানীয় জলের খরচও দিয়েছে না। আমাদের ৯০% খরচ হয়েছে।”
তিনি জিএসটি কর ছাড়, পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার এবং ভাষা-সাহিত্য সংক্রান্ত বিষয়েও জনগণকে সতর্ক করেন। “ভাষা আমাদের মা। বাংলা আমাদের অস্মিতা। বাংলাকে ছাড়ব না।”
মজার ও স্নেহময় মুহূর্ত
- চার দিন ধরে রান্না হয়, পাড়া প্রতিবেশী সবাই মিলে খায়
- পুজোতে ভিড় হলেও উৎসবের আনন্দ অটুট থাকে
- পুজোর সময়ে প্রতিটি পিঠা-পায়েস ঘরে পৌঁছে যায়
চেতলা অগ্রণীর দুর্গাপুজো খরচ ও আয়োজনের তথ্য
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
পুজোর আয়োজন | মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজো মণ্ডপ |
মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি | দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকা |
দর্শকদের জন্য বার্তা | সাবধানে মণ্ডপে আসা, ভিড় এড়িয়ে চলা |
রান্নার আয়োজন | চার দিন ধরে স্থানীয়রা ভাগাভাগি করে খায় |
খরচ | মোট খরচের ৯০% রাজ্য সরকার বহন করেছে |
উপসংহার
কলকাতা চেতলা অগ্রণী সংঘ দেবীর চোখ আঁকলেন মমতা দুর্গা পূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং মানুষের সংহতির প্রতীক। মহালয়ার দিন থেকেই প্যান্ডেল উদ্বোধন এবং দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনন্দ। তাঁর বক্তব্য দর্শকদের সতর্ক করে, আনন্দ এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে সমানভাবে বজায় রাখার আহ্বান জানায়।
FAQ
দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেতলা অগ্রণী সংঘে কেন গিয়েছিলেন?
মুখ্যমন্ত্রী মহালয়ার দিনে চেতলা অগ্রণী সংঘের পুজো মণ্ডপে উপস্থিত হন প্রধান অতিথি হিসেবে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকেন, যা ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে জনগণের সংযোগ বাড়ায়। এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ধরা হয়।
দর্শকরা পুজো মণ্ডপে কি সতর্কতা অবলম্বন করবেন?
মুখ্যমন্ত্রী দর্শকদের সাবধানবার্তা দেন যাতে ভিড়ের কারণে কেউ আহত না হয়। দর্শকদের বলা হয়, প্যান্ডেলে আসার সময় সাবধানে চলাচল করতে এবং অন্যান্য দর্শকের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। এই নির্দেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পূজার সময় সকলের সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুজোর সময় খাবারের আয়োজন কেমন হয়?
পুজোর চারদিন ধরে রান্না হয়, যা পাড়া প্রতিবেশীরা ভাগাভাগি করে খায়। মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এই খাবার উৎসবের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তোলে এবং সমাজের সংহতি দৃঢ় করে। এটি চেতলা অগ্রণীর পুজোর একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পুজোতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কী বার্তা দেন?
তিনি জানান, রাজ্য সরকার খরচের ৯০% নিজেই বহন করেছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সহায়তা সীমিত ছিল। এছাড়াও জিএসটি কর ছাড় এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয়েও তিনি জনগণকে অবহিত করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পূজা উপলক্ষে রাজনীতিক দিক থেকেও সচেতনতার বার্তা দেন।
চেতলা অগ্রণীর দুর্গাপুজোর ইতিহাস ও ঐতিহ্য কী?
আগে বাসন্তী পুজো হত, পরে দুর্গা পুজো জাতীয় উৎসব হিসেবে পরিচিতি পায়। চেতলা অগ্রণী সংঘের পুজো মণ্ডপে এই ঐতিহ্য ধরে রাখা হয়েছে। এখানে প্রতিটি বছর স্থানীয় মানুষ, শিল্পী এবং স্বেচ্ছাসেবকরা একত্র হয়ে সংস্কৃতি, খুশি এবং সম্প্রদায়ের সংহতি বজায় রাখেন।