কর্মশ্রী প্রকল্প ২০২৫ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণা জানতেই চান সবাই—ফিরলেই মিলবে ৫০ দিনের কাজ, দোকান, এমনকি ট্রেনভাড়াও দেবে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: কর্মশ্রী প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণা প্রতিদিন নতুন আশার আলো জাগাচ্ছে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক ও বেকার যুবসমাজের মধ্যে। এবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, বাংলায় কাজের অভাব নেই—ফিরে এলেই মিলবে কাজ। কর্মশ্রী প্রকল্পে মিলবে কাজ, স্কুলে ভর্তি হবে সন্তান, এমনকি ভাড়াও দেবে সরকার।
কর্মশ্রী প্রকল্প ২০২৫: মুখ্যমন্ত্রীর বড় ঘোষণা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্য সরকার চালু করেছিল কর্মশ্রী প্রকল্প। আর এবার, সেই প্রকল্পে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজনের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমে এক সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি জানালেন, “গতবার ৫৮ দিনের কাজ দেওয়া হয়েছিল, এবছরও তা বজায় থাকবে।”
পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, “ওঁদের বলুন বাংলায় ফিরে আসতে। কর্মশ্রী প্রকল্পে কাজের সুযোগ রয়েছে। এমনকি, আসার জন্য ট্রেন বা বাসের ভাড়াও দেবে রাজ্য সরকার।”
কেন এই কর্মশ্রী প্রকল্প এত গুরুত্বপূর্ণ এখন?
কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বিকল্প হিসেবে রাজ্য সরকার চালু করেছে এই কর্মসংস্থান প্রকল্পটি।
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এতে শুধু কাজই নয়, বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য স্কিল ট্রেনিংও মিলবে।
এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি কাজ দ্রুত করতে সহায়ক হবে এই কর্মসূচি।
কীভাবে কাজ পাবেন কর্মশ্রী প্রকল্পে?
এই প্রকল্পের আওতায় কাজ পেতে গেলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে। সবচেয়ে জরুরি হলো, আপনার থাকতে হবে একটি জব কার্ড।
আবেদনের শর্তসমূহ
- আবেদনকারীর রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া আবশ্যক
- থাকতে হবে বৈধ Job Card
- প্রতিটি ব্যক্তিকে বছরে ন্যূনতম ৫০ দিনের কাজ দেওয়া হবে
- পরিযায়ী শ্রমিকরাও এবার থেকে এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কর্মশ্রী প্রকল্পের বিশেষ সুবিধা
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, এবার রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া বহু শ্রমিক ঘরে ফিরতে পারবেন। রাজ্যে ফিরে এই প্রকল্পের অধীনে কাজ পাবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া, বিনামূল্যে দোকান বরাদ্দ, এমনকি সরকারি প্রশিক্ষণও মিলবে।
কর্মশ্রী প্রকল্পের উদ্দেশ্য কী?
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য একদিকে যেমন বেকারত্ব কমানো, অন্যদিকে তেমনি সরকারি নানা প্রকল্পের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করা। রাজ্য সরকার এই প্রকল্পে Skill Development Training-এরও ব্যবস্থা রেখেছে।
কর্মতীর্থে দোকান বরাদ্দ: নতুন সুবিধা কর্মশ্রীতে
মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যের বিভিন্ন কর্মতীর্থ বা হাব-এ এবার থেকে কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে দোকান দেওয়া হবে। এর ফলে রাজ্যের কর্মদিবসের সংখ্যা বাড়বে বলেও আশাবাদী প্রশাসন।
কর্মশ্রী প্রকল্প ২০২৫ – মূল তথ্য এক নজরে
বিভাগ | বিবরণ |
---|---|
প্রকল্পের নাম | কর্মশ্রী (Karmashree Scheme) |
চালু বছর | ২০২৪ |
মূল লক্ষ্য | পরিযায়ী শ্রমিক ও বেকারদের কর্মসংস্থান |
কাজের গ্যারান্টি | বছরে ন্যূনতম ৫০ দিন |
আবশ্যকতা | রাজ্যের বাসিন্দা + জব কার্ড |
বিশেষ সুবিধা | ভাড়া, দোকান, প্রশিক্ষণ, স্কুলে ভর্তি |
নতুন ঘোষণা | ২০২৫ সালে আরও সম্প্রসারণ |
কেন ‘কর্মশ্রী প্রকল্প’ গুগলে এত বেশি সার্চ হচ্ছে?
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে কর্মশ্রী প্রকল্প শব্দটি গুগলে অন্যতম জনপ্রিয় সার্চ কীওয়ার্ড। বেকার যুবক-যুবতী, পরিযায়ী শ্রমিক, এমনকি ছোট ব্যবসায়ী শ্রেণির মধ্যেও এই প্রকল্প নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া নানা সুবিধার ফলে মানুষ খুঁজছেন—
- কর্মশ্রী প্রকল্পে আবেদন কিভাবে করব
- Job Card না থাকলে কী হবে
- কর্মতীর্থে দোকান পাওয়ার নিয়ম
- ৫০ দিনের কাজের প্রকৃত অর্থ কী
কর্মশ্রী প্রকল্পে নতুন আশার বার্তা
কর্মশ্রী প্রকল্প এখন শুধু একটা সরকারি স্কিম নয়, বরং হাজার হাজার বেকার ও শ্রমজীবী মানুষের নতুন জীবন শুরু করার সম্ভাবনা। মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী দিনে এই প্রকল্পে আরও সুযোগ বাড়বে। তাই যারা রাজ্যের বাইরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন, এবার তাদের ঘরে ফেরা শুধু আবেগ নয়—বাস্তব উপার্জনের পথ হতে চলেছে।
কর্মসংস্থানের বিকল্প পথ খুলছে পশ্চিমবঙ্গের নতুন উদ্যোগে
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার বেকারত্ব হ্রাসে বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নিচ্ছে। কর্মশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে কর্মসংস্থানের এক নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে। শুধু পরিযায়ী শ্রমিক নয়, গ্রামীণ ও শহরের শিক্ষিত বেকারদের জন্যও এই সরকারি কাজের সুযোগ নতুনভাবে আশার আলো দেখাচ্ছে।
যারা আগে কেন্দ্রের ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করতেন, এখন তারা রাজ্যের নিজস্ব কর্মসংস্থান প্রকল্প-এ যুক্ত হতে পারছেন। এতে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে দক্ষতা উন্নয়নের পথও খুলছে।
সরকারি কাজের সুবিধা ও সমাজিক নিরাপত্তার নতুন দিশা
বর্তমানে সরকারি প্রকল্পে যুক্ত হওয়া মানেই শুধু কাজ পাওয়া নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ সামাজিক সহায়তা কাঠামোর মধ্যে প্রবেশ করা। কর্মশ্রী প্রকল্পে যারা যুক্ত হচ্ছেন, তারা শুধু মাসিক উপার্জনই করছেন না—একইসাথে পাচ্ছেন প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে দোকান, সন্তানের শিক্ষার সুযোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা।
এই পশ্চিমবঙ্গ স্কিম মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। ফলে ভবিষ্যতে এর আওতা আরও বাড়বে বলে আশা করছে প্রশাসন।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আর্থিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার নতুন আশা
বহু বছর ধরে যারা রাজ্যের বাইরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন, তাদের জন্য কর্মশ্রী প্রকল্প একটি পরিযায়ী শ্রমিক সহায়তা স্কিম হিসেবে কাজ করছে। রাজ্যে ফিরে তারা এখন ভরসাযোগ্য আয়ের উৎস পাচ্ছেন। শুধু কাজই নয়, রাজ্য সরকার তাদের যাতায়াতের খরচ বহন করছে, স্কুলে ভর্তি দিচ্ছে সন্তানদের, এমনকি রাজ্যের কর্মতীর্থে দোকানও বরাদ্দ করছে।
এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থিতিশীল জীবনধারার ভিত্তি গড়ে তুলছে এবং কর্মহীনতার বিরুদ্ধে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠছে।
কর্মশ্রী প্রকল্প নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাস্য (FAQ)
কর্মশ্রী প্রকল্প কী?
কর্মশ্রী প্রকল্প রাজ্য সরকারের একটি কর্মসংস্থান প্রকল্প, যার মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিক ও রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের বছরে নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে জব কার্ড থাকা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
এই প্রকল্পে কাদের জন্য কাজের সুযোগ রয়েছে?
মূলত রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দারা, যাঁদের বৈধ জব কার্ড রয়েছে, তাঁরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ন্যূনতম ৫০ দিনের কাজ পেতে পারেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই প্রকল্পে।
কর্মশ্রী প্রকল্পে কাজ পাওয়ার জন্য কোন নথি প্রয়োজন?
এই প্রকল্পে অংশ নিতে হলে আবেদনকারীর একটি বৈধ Job Card থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে পরিচয়পত্র ও ঠিকানার প্রমাণপত্র দিতে হবে।
এই প্রকল্পে কি প্রশিক্ষণ (training) দেওয়া হয়?
হ্যাঁ, কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে আবেদনকারী কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজের দক্ষতা বাড়ে এবং ভবিষ্যতে আরও সুযোগ তৈরি হয়।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ কী সুবিধা রয়েছে?
পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে আসলে শুধুমাত্র কাজই নয়, তাদের যাতায়াত খরচ, সন্তানদের স্কুলে ভর্তি, এমনকি দোকান বরাদ্দের সুবিধাও দেওয়া হয়। কর্মশ্রী প্রকল্পের অধীনেই এই সহায়তা পাওয়া যায়।
কর্মতীর্থে দোকান পাওয়ার নিয়ম কী?
রাজ্যের কর্মতীর্থ বা সরকারি হাবে কর্মশ্রী প্রকল্পের উপভোক্তারা নির্দিষ্ট আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোকান পেতে পারেন। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই সুবিধা বিশেষভাবে দক্ষ এবং কাজের যোগ্য উপভোক্তাদের জন্য চালু করা হয়েছে।
কর্মশ্রী প্রকল্পে বছরে কতদিন কাজ দেওয়া হয়?
এই প্রকল্পে একজন ব্যক্তি বছরে ন্যূনতম ৫০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা পান। যদিও স্থানভেদে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে, তবে রাজ্য সরকার প্রতিবছর সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করে।
কর্মশ্রী প্রকল্পে আবেদন কোথায় করতে হয়?
বর্তমানে স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস বা সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিসে গিয়ে আবেদন করা যায়। ভবিষ্যতে অনলাইন আবেদন ব্যবস্থাও চালু হতে পারে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কর্মশ্রী প্রকল্প ও ১০০ দিনের কাজের মধ্যে পার্থক্য কী?
১০০ দিনের কাজ কেন্দ্রীয় প্রকল্প হলেও কর্মশ্রী প্রকল্প রাজ্য সরকারের নিজস্ব উদ্যোগ। এই প্রকল্পে কাজের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, দোকান বরাদ্দ এবং অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধাও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
কর্মশ্রী প্রকল্প নিয়ে আরও তথ্য কোথা থেকে পাওয়া যাবে?
ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত অফিস এবং রাজ্য সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে কর্মশ্রী প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও স্থানীয় হেল্পডেস্ক ও ক্যাম্পের মাধ্যমেও এই প্রকল্প নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।