নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু প্রতিদিন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও গভীর হচ্ছে। পরিবারের দাবি, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং খুনের ছক। অন্যদিকে, পুলিশ এখনও একাধিক দিক খতিয়ে দেখছে। ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া এই অস্বাভাবিক ঘটনায় রাজনীতির রঙও গাঢ় হয়ে উঠেছে।
রহস্যে ঘেরা অনামিকার মৃত্যু
বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে গোটা রাজ্য। কেউ বলছে অনামিকা জলে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, আবার কেউ বলছে তাঁকে ইচ্ছে করেই ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু তাই এখন তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি
- অনামিকার মোবাইল ফোন ইতিমধ্যেই পুলিশের হেফাজতে।
- মোবাইল থেকে দেখা হচ্ছে শেষবার কার সঙ্গে কথা হয়েছিল।
- তিন বন্ধুকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ : খুনের ছক
অনামিকার পরিবারের দাবি, মেয়ে নিজে থেকে পড়ে যায়নি। তাঁকে কেউ ঠেলে দিয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত খুন। তাই তারা পুলিশের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
রাজনীতির ঝড় উঠল যাদবপুরে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু নিয়ে এবার সরব বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। শুভেন্দুর দাবি, এখানে মাদক, উগ্র-বাম রাজনীতি এবং সাংবিধানিক বিরোধী কাজকর্ম চলছে। তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই পরিবেশকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
শুভেন্দুর বক্তব্যের মূল পয়েন্ট
- যাদবপুরে সিসি টিভি লাগাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
- উগ্র বামপন্থীদের হাতেই নিয়ন্ত্রণ।
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের প্রশ্রয় দেন ভোটের কারণে।
বিরোধীদের পাল্টা জবাব
শুভেন্দুর মন্তব্যের পর সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কড়া সুরে প্রতিক্রিয়া দেন। তাঁর মতে, এত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় রাজনীতি টেনে আনা একেবারেই উচিত নয়। তিনি শুভেন্দুর বক্তব্যকে “ধ্বংসাত্মক মনোভাব” বলে অভিহিত করেন।
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য দাবি করেন, যাদবপুরে সিসি টিভি বসানোর আন্দোলন আসলে তাঁরাই শুরু করেছিলেন। উগ্র-বামপন্থীরাই তার বিরোধিতা করেছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু: কী কী প্রশ্ন উঠছে?
এই ঘটনার পর থেকে একাধিক প্রশ্ন এখনো উত্তরহীন—
- সত্যিই কি অনামিকা দুর্ঘটনায় মারা গেলেন?
- তাঁর মোবাইল থেকে কী তথ্য বেরোবে?
- ক্যাম্পাসে কারা তাঁকে ডেকে নিয়েছিল?
- রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কি তদন্তকে প্রভাবিত করবে?
তালিকা : যেসব দিক তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে
- মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড
- প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি
- ক্যাম্পাসে সিসি টিভি লাগানো হবে কি না
- পারিবারিক অভিযোগ ও পুলিশের তথ্য মিলিয়ে দেখা
টেবিল : কার কী বক্তব্য
পক্ষ/ব্যক্তি | বক্তব্য/অভিযোগ |
---|---|
মৃতের পরিবার | খুনের অভিযোগ তুলেছে, সঠিক তদন্ত দাবি করছে |
শুভেন্দু অধিকারী (বিজেপি) | যাদবপুরকে মাদক ও উগ্রবাম রাজনীতির আখড়া বলেছেন |
সুজন চক্রবর্তী (সিপিএম) | ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন |
দেবাংশু ভট্টাচার্য (তৃণমূল) | সিসি টিভি বসানোর দাবিতে তৃণমূলই প্রথম আন্দোলন করেছে |
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু কেবল একটি পরিবারের নয়, গোটা রাজ্যের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পুলিশের তদন্তে কী সত্যি বেরিয়ে আসে। রাজনীতির ঝড়ের মাঝেও সাধারণ মানুষ একটাই উত্তর খুঁজছে—আসলে কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল অনামিকার?
FAQ কী বলে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে?
অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যু নিয়ে এখনও রহস্য কাটেনি। পরিবার দাবি করছে এটি খুন, তবে পুলিশ বলছে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই মৃত্যুর আসল কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা কী?
পুলিশ অনামিকার মোবাইল জব্দ করেছে এবং বন্ধুবান্ধবদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তদন্তে প্রত্যেকটি সূত্র খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে সত্য প্রকাশ্যে আসে।
পরিবার কেন খুনের অভিযোগ তুলেছে?
পরিবারের বক্তব্য, অনামিকা স্বাভাবিকভাবে জলে পড়ে মারা যেতে পারে না। তাঁদের দাবি, কেউ তাঁকে ঠেলে দিয়েছে বা পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কেন শুরু হয়েছে?
এই ঘটনা সামনে আসার পর বিরোধী ও শাসক দুই পক্ষই একে অপরকে আক্রমণ শুরু করেছে। শুভেন্দু অধিকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে উগ্র-বামদের নিয়ন্ত্রণাধীন বলেছেন, আর বাম ও তৃণমূল নেতারা পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মৃত্যু নিয়ে কী কী প্রশ্ন রয়ে গেছে?
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এটি দুর্ঘটনা নাকি খুন। এছাড়া মোবাইল ফোনের ডেটা, প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি এবং সিসি টিভি বসানো নিয়েও এখনো উত্তর মিলছে না।