নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার
প্রতি বছর দীপাবলির সময় আলো-আলোয়া ও বাজির উত্সব হয়। তবে ভারতে বাতিল ছিল বাজি ফাটানোর নিয়ম। এবার সুপ্রিম কোর্ট দিল সিদ্ধান্ত — দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহারের সুযোগ দিল দিল্লি-এনসিআরে।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত: বাজি ফাটানোর অনুমতি দিল দিল্লি-এনসিআরে
সুপ্রিম কোর্ট এক নয়া নির্দেশনা দিয়েছে: দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ছাড়া অন্য ধরনের বাজি নিয়ে আসা যাবে না। এর মাধ্যমে আদালত চায় যে যেসব বাজি কম ধুলো ও দূষণ ছড়ায় — সেগুলোই ব্যবহৃত হবে।
আদেশ অনুযায়ী, ১৮ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে বাজি বিক্রি ও ফাটানো যাবে, তবে নির্দিষ্ট সময়সীমানার মধ্যে — সকাল ৬টা থেকে ৭টা, এবং সন্ধ্যা ৮টা থেকে রাত ১০টা।
নিষেধাজ্ঞা ও শর্তাবলী: কী বলেছে আদালত?
- দিল্লি–এনসিএর বাইরের এলাকা থেকে বাজি নিয়ে আসা অনুমনোদিত।
- বাজি বিক্রেতাদের এবং স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বায়ুমান সূচক (AQI) নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করার।
- এই অনুমতিটি অস্থায়ী ব্যবস্থাপনা হিসেবে প্রযোজ্য হবে, শুধুমাত্র নির্ধারিত দিনগুলোতে।
- আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে যে সবুজ বাজি হলেও কিছুটা দূষণ করে — তবে প্রচলিত বাজির তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম।
সময়সীমা ও মূল বিধিনিষেধ
বিষয় | সময় / সীমা |
---|---|
বাজি বিক্রি ও ফাটানোর দিন | ১৮ – ২১ অক্টোবর |
জমা বাজি আনা যাবে এমন জেলা | শুধুমাত্র দিল্লি-এনসিএর মধ্যে |
বাজি ফাটানোর অনুমতিপ্রাপ্ত সময় | সকাল ৬:০০–৭:০০, সন্ধ্যা ৮:০০–১০:০০ |
বাজির ধরন | শুধুমাত্র দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার |
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যে প্রভাব
যদিও সবুজ বাজি তুলনামূলকভাবে কম ধুলো ছড়ায়, তবুও দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় নয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকর কণিকা এবং গ্যাস প্রবেশ করতে পারে — বিশেষ করে বয়স্ক ও শ্বাসকষ্টরোগীদের জন্য।
বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ
অনুমোদিত দিনগুলির বাইরে বাজি বিক্রি বন্ধ রাখার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু কালোবাজার, অননুমোদিত বোর্ড বা অবৈধ উদ্যোগ এই নিয়ম অমান্য করতে পারে — যা আদানপ্রদান ও নজরদারিতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
সবার জন্য একটা পরামর্শ
যারা বাজি ফাটাবেন — দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকারই বেছে নিন।
নির্ধারিত সময় ছাড়া বাজি ফাটাবেন না — আইন লঙ্ঘন হতে পারে।
বাজি ফাটানোর আগে স্থানীয় বায়ুমান সূচক (AQI) পরীক্ষা করে নিন।
শিশু ও প্রবীণদের দূরে রাখুন, এবং সাবধানতার সঙ্গে অংশ নিন উৎসবে।
দিল্লি-এনসিআরবাসীর প্রত্যাশা
এই সিদ্ধান্তে অনেকেই খুশি হয়েছেন কারণ দীপাবলি মানে আলোর উৎসব, আনন্দের দিন। বহু বছর পর আবার বাজির আওয়াজ শোনা যাবে, কিন্তু এবার দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশকেও রক্ষা করা সম্ভব হবে।
প্রশাসনের ভূমিকা
দিল্লি সরকার ও পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, নিয়ম লঙ্ঘন করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ বেশি, সেখানে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। বাজি বিক্রেতাদেরও লাইসেন্স দিতে হবে শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব পণ্য বিক্রির অনুমোদন থাকলে।
দীপাবলি উৎসবে সচেতনতার বার্তা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীপাবলি আনন্দের দিন হলেও সচেতনতা থাকা জরুরি। বাজির বদলে মোমবাতি, প্রদীপ বা ইলেকট্রনিক আলো ব্যবহার করেও উৎসবকে সুন্দর করে তোলা যায়। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তারা দূরে থাকুন বাজির ধোঁয়া থেকে এবং ছোটদেরও সাবধান রাখুন।
ভবিষ্যতে কী হতে পারে
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে অনেকেই “ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত” বলছেন। কারণ এতে একদিকে উৎসবের আনন্দ বজায় থাকবে, অন্যদিকে দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতিও কম হবে। ভবিষ্যতে যদি এই পরিকল্পনা সফল হয়, তাহলে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এমন নিয়ম চালু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেষ কথা
দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত শুধু দিল্লি-এনসিআরের নয়, গোটা দেশের জন্য একটা নতুন বার্তা বহন করছে। দীপাবলির আনন্দে পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববোধও থাকা দরকার। সবাই যদি একটু সচেতন হয়, তাহলে আলোর উৎসব সত্যিই আলোকিত হবে — দূষণ নয়, আলোয় ভরপুর দীপাবলি হোক সবার।
FAQs: দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার
দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার কি?
দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার হলো এমন ধরনের বাজি যা প্রচলিত বাজির তুলনায় কম ধুলো ও দূষণ ছড়ায়। এটি পরিবেশবান্ধব এবং স্বল্প দূষণ উৎপন্ন করে, তাই দীপাবলির উৎসবে ব্যবহার করা হয়।
দিল্লি-এনসিআরে কবে ব্যবহার করা যাবে?
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ১৮ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত সময়ের মধ্যে ফাটানো যাবে। সকাল ৬টা থেকে ৭টা এবং সন্ধ্যা ৮টা থেকে রাত ১০টা সময়সীমা নির্ধারিত।
কি কারণে শুধুমাত্র গ্রিন ক্র্যাকার অনুমোদিত?
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রচলিত বাজি বেশি ধুলো ও দূষণ ছড়ায়। দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার তুলনামূলকভাবে কম দূষণ ছড়ায়, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ব্যবহার করার সময় কি নিয়ম মেনে চলতে হবে?
দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ফাটানোর সময় শিশু ও প্রবীণদের দূরে রাখা, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং নির্ধারিত সময় মেনে চলা আবশ্যক। এছাড়া স্থানীয় AQI পরীক্ষা করে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত।
প্রশাসনের দায়িত্ব কি?
বাজি বিক্রি এবং ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করা প্রশাসনের দায়িত্ব। অনুমোদিত দিন ও সময় ছাড়া বাজি বিক্রি বা ফাটানো হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালোবাজার ও অননুমোদিত বিক্রি আটকানো প্রশাসনের দায়িত্ব।
কি কারণে গ্রিন ক্র্যাকার পুরোপুরি দূষণমুক্ত নয়?
গ্রিন ক্র্যাকার কম দূষণ ছড়ালেও কিছু ক্ষতিকর কণিকা এবং ধোঁয়া হয়। এটি প্রচলিত বাজির তুলনায় নিরাপদ হলেও সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত নয়, তাই সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত।
ভবিষ্যতে কি আরও প্রচলিত হবে?
যদি এই পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়, অন্যান্য রাজ্যেও দূষণ নিয়ন্ত্রিত গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহারের নিয়ম চালু হতে পারে, যা পরিবেশ বান্ধব উৎসবকে আরও জনপ্রিয় করবে।