
কি কারনে মৃত্যু হল দিল্লি স্টেশনে ১৮ জন সাধারণ মানুষের দিল্লি স্টেশনে মৃত্যুর কারণ সামনে এলো মহাকুম্ভ গামী ট্রেন দিল্লি স্টেশনে মৃত্যু
মহাকুম্ভে পূর্ণ স্নানের আশায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বাসে ট্রেনে ভিড় জমিয়েছে। দিল্লিতে ঘটে গেল ভয়ানক বিপর্যয়, এই ঘটার মূল কারণ এবং কি কারনে মৃত্যু হল মহা কুম্ভ গামী ট্রেনে এমন বিপর্যয় হল তা আসল ঘটনা সামনে এলো।
দিল্লি স্টেশনে মৃত্যুর কারণ
দিল্লি স্টেশনে মহাকুম্ভ যাওয়ার পথে প্রত্যক্ষদর্শীরা একাধিক কারণ জানিয়েছেন ট্রেন দুর্ঘটনার। অনেকের মতে প্ল্যাটফর্ম বদলেছে এরকম বিভ্রান্তি মূলক ঘোষণার জন্যই বিপর্যয় ঘটেছে।
যারা সামনাসামনি দেখেছেন, তারা জানিয়েছেন রাত 9 টা থেকে 10 টা মধ্যেই বিপর্যয় ঘটেছে। ট্রেন টি ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে এই বিপর্যয়ের আগে জানা যায় একটি ঘোষণা হয় ট্রেনটির ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে।
এই ঘোষণার পরে শুরু হয়ে যায় ছোট ছুটি দৌড়াতে থাকে জনতা। তবে এটা আবার কেউ কেউ বলছে গুজব আর রেলওয়ে সিপিআর জানিয়েছেন এরকম প্লাটফর্ম পরিবর্তনের কোন ঘোষণাই আদৌ হয়নি। যার ফলে একটা বিভ্রান্ত মূলক খবর চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে।
এছাড়াও পড়ুন:- সর্বশেষ খবর, সরকারি প্রকল্প, চাকরির খবর
রেলওয়ে সূত্রে খবর হঠাৎ করে 12 নম্বর প্লাটফর্ম থেকে এক ধরনের বিশেষ ট্রেন ঘোষণা হয় আর ঠিক তারপরেই, ১৪ নম্বরে প্ল্যাটফর্মের সমস্ত যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে ট্রেন ধরার জন্য দৌড়াতে শুরু করে তারপরেই ঘটে যায় এমন দুর্ঘটনা।
ট্রেনের নাম নিয়ে বিভ্রান্তি দিল্লি স্টেশনে মৃত্যুর কারণ :-
বহু মানুষ মনে করছেন একটি বিভ্রান্ত ঘোষণা আর সে বিভ্রান্ত ঘোষণাটি সবকিছু যেন কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ধুলিস্যাৎ।
সেদিন যেসব ট্রেনগুলো ছেড়ে যাচ্ছিল:-
- ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়াগ রাজ স্পেশাল ট্রেন ।
- ১৩ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে স্বাধীন সোনালী এক্সপ্রেস ট্রেন ।
- ১৪ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস।
- ১৫ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে নয়া দিল্লী বেনারস এক্সপ্রেস
যার ফলে এই চারটি ট্রেন ঐদিন প্রয়াগরাজ যাচ্ছিল, তাই যাদের কাছে জেনারেল টিকিট ছিল তাদের লক্ষ্য ছিল যেকোনো একটি ট্রেনে উঠে পড়া।
তবে যে কারণে বিভ্রান্ত হয় ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বিশেষ ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছিল প্রয়াগরাজ , হঠাৎ গুজব ছড়ায় ১৬ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছাড়বে। তবে রেল এই কথা মানতে নারাজ তাদের দাবি এরকম কোন অ্যানাউন্স হয়নি। ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে যে বিসিএস ট্রেন ঘোষণা হয়। তখনই ১৪ নম্বরের প্লাটফর্মে থাকা যাত্রীরা ওই ট্রেনে ওঠার জন্য ছুটেন। তাতেই সর্বনাশ ঘটে যায়।
ট্রেনের নামের বিভ্রান্তি:-
কেউ কি মনে করছে দুটো আলাদা আলাদা ট্রেন কেউ বুঝতেই পারছে না।
একটা ছিল প্রাগ্রাজগামী স্পেশাল ট্রেন। পণ্যটি ছিল প্রয়াগ রাজ এক্সপ্রেস। তাই ঘোষণা শুনে কে কোন ট্রেনে উঠবে বুঝতে না পেরে এই ছোটাছুটি শুরু করে বিভ্রান্তির কারণেই এমন মৃত্যু ডেকে এনেছে।
বিভিন্ন বিভ্রান্তির ঘোষণা মানুষের মধ্যে প্রচারিত হওয়ায় কেউ ১২ নম্বর কেউ 14 নম্বর দিকে যেতে শুরু করেন আর তখনই ঘটে যায় মর্মান্তিক মৃত্যু।
নয়া দিল্লি রেলস্টেশনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা: পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন ১৮ জন
২০২৫ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সকালে দিল্লির অন্যতম ব্যস্ত নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। অতিরিক্ত ভিড় এবং বিশৃঙ্খলার ফলে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন যাত্রী, যাঁদের মধ্যে মহিলা ও শিশুরাও রয়েছেন। এই ঘটনাটি গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে এবং রেল প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা?
প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় যোগ দিতে উত্তর ভারত থেকে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী ভিড় করেছিলেন স্টেশনে। ট্রেন বদলের ঘোষণা হতেই, সকলে হুড়মুড়িয়ে ছুটে পড়েন প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন করতে। সিঁড়ি ও ফুট ওভার ব্রিজে হঠাৎ অতিরিক্ত ভিড় জমে যায়, এবং ঠিক তখনই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অনেক যাত্রী পড়ে যান, আর ওঠার সুযোগ না পেয়েই পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান।
কেন ঘটল এই বিপর্যয়?
- পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীর অভাব
- স্পষ্ট ও সময়মতো ঘোষণা না হওয়া
- ভিড় নিয়ন্ত্রণের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা
- স্টেশন ব্যবস্থাপনার ত্রুটি
এই প্রতিটি কারণ একে অপরের সঙ্গে জড়িত এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে এই ধরনের অব্যবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
রেল ও সরকারের প্রতিক্রিয়া
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মৃতদের পরিবারকে ₹১০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ₹২.৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে বলেন, “এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক একটি দুর্ঘটনা, আমি মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি।”
বিরোধী শিবিরের তীব্র আক্রমণ
এই দুর্ঘটনার পর বিরোধী দলগুলি কেন্দ্র সরকার ও রেল দপ্তরের ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “এই সরকারের কাছে মানুষের প্রাণের কোনো মূল্য নেই। প্রস্তুতি ছাড়াই মানুষকে বিপদের মুখে ফেলা হয়েছে।” অন্যান্য রাজনৈতিক দলও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ
এই ঘটনা সামনে আসতেই সামাজিক মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন— “যেখানে বুলেট ট্রেন আর বন্দে ভারত নিয়ে এত প্রচার, সেখানে সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা কই?” অনেকে দুর্ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেন যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ প্রয়োজন?
- রেলস্টেশনগুলিতে আধুনিক ভিড় নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি প্রয়োগ
- স্পষ্ট ও সময়মতো ট্রেন ও প্ল্যাটফর্ম সংক্রান্ত তথ্য প্রদান
- প্রতিটি বড় স্টেশনে জরুরি প্রস্থানের ব্যবস্থা
- অতিরিক্ত যাত্রীসমাগমে নিরাপত্তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন
উপসংহার
নয়া দিল্লি রেলস্টেশনের এই মর্মান্তিক ঘটনা শুধুমাত্র একাধিক প্রাণহানির নয়, বরং গোটা দেশের রেল ব্যবস্থার একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। যাত্রীদের জীবনের মূল্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটবে। এখনই সময়, ব্যবস্থা নেওয়ার।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
১. নয়া দিল্লি রেলস্টেশনে কী কারণে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে?
অতিরিক্ত যাত্রী সংখ্যা, স্পষ্ট নির্দেশনার অভাব এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। হঠাৎ প্ল্যাটফর্ম বদলের ঘোষণায় ভিড় হুড়োহুড়ি করে এবং অনেকে পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন।
২. এই দুর্ঘটনায় কতজনের মৃত্যু হয়েছে?
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
৩. রেল মন্ত্রণালয় কী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে?
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মৃতদের পরিবারকে ₹১০ লক্ষ এবং আহতদের ₹২.৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি, ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৪. কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ভবিষ্যতে?
স্টেশনে আধুনিক ভিড় নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি, সিসিটিভি মনিটরিং, জরুরি প্রস্থান পথ এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন।
৫. বিরোধী দল কী বলছে এই ঘটনায়?
বিরোধী দলগুলি সরকারের ব্যর্থতা এবং রেল দপ্তরের দায়িত্বহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অনেক নেতা রেলমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন।