দিল্লির পথকুকুর মামলা: সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চে বড় শুনানি, বিতর্ক তুঙ্গে

দিল্লির পথকুকুর মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার শুনানি শুরু হয়েছে। জননিরাপত্তা ও পশুপ্রেমীদের তর্কে দেশজুড়ে উত্তেজনা।

দিল্লির পথকুকুর মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চে শুনানির দৃশ্য
দিল্লির পথকুকুর মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে
Advertisement
Ujjwal Dey

Published By Ujjwal Dey

Updated on: August 14, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : দিল্লির পথকুকুর মামলা প্রতিদিনই নতুন মোড় নিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজধানীর রাস্তায় থাকা হাজার হাজার পথকুকুর সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একদিকে প্রশাসনের দাবি, এই পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য জরুরি; অন্যদিকে পশুপ্রেমীরা বলছেন, এভাবে জীবজন্তুর স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া অন্যায়। এই পরিস্থিতিতে মামলাটি দুই বিচারপতির বেঞ্চ থেকে সরিয়ে তিন বিচারপতির নতুন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে, যেখানে বৃহস্পতিবারই হবে শুনানি।

দিল্লির পথকুকুর মামলা নতুন বেঞ্চে, বৃহস্পতিবারেই শুনানি

রাজধানীর দিল্লির পথকুকুর মামলা প্রথমে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চে ছিল। গত সোমবার তারা নির্দেশ দেন, অবিলম্বে লোকালয় থেকে সমস্ত পথকুকুর সরিয়ে জীবাণুমুক্ত করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে। পাশাপাশি, পথে আর কোনও কুকুর দেখা যাবে না—এমন কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তেই শুরু হয় প্রবল বিতর্ক।

Advertisement

পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি আদালতের নজরে আনেন যে, এই রায় পূর্ববর্তী এক নির্দেশনার পরিপন্থী। এমনকি নির্দেশের কপি আপলোডের আগেই কুকুর ধরার কাজ শুরু হয়ে যায়। এরপর প্রধান বিচারপতি বিআর গবই জানান, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। বুধবার রাতেই সিদ্ধান্ত হয়, মামলা তিন সদস্যের নতুন বেঞ্চে যাবে।

জলাতঙ্ক ও জননিরাপত্তা—প্রশাসনের যুক্তি

প্রশাসনের দাবি, দিল্লি ও এনসিআর জুড়ে পথকুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বছরে প্রায় ৩৭ লক্ষ মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হন, যা দৈনিক প্রায় ১০ হাজার। এই পরিস্থিতি সামলাতে কুকুরদের আলাদা করে রাখা ছাড়া উপায় নেই বলে জানায় কেন্দ্র। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বক্তব্য, “পথকুকুর মেরে ফেলার কথা কেউ বলছে না, কিন্তু জননিরাপত্তার জন্য তাদের পৃথকভাবে রাখতে হবে।”

পশুপ্রেমীদের পাল্টা মত

আইনজীবী কপিল সিব্বলের মতে, দিল্লির পথকুকুর মামলা-তে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা কার্যত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে অনেক প্রাণীকে। কারণ রাজধানীতে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রই নেই। সেক্ষেত্রে ধরা পড়া কুকুরদের কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে প্রবল সংশয় রয়েছে। সোমবারের নির্দেশের পর ইতিমধ্যেই ৭০০ কুকুর ধরা হয়েছে—তাদের পরিণতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সিব্বল।

রোহিত শর্মার স্ত্রীর প্রতিবাদ

এ বিতর্কে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার স্ত্রী রীতিকা সজদেও। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, সূর্যের আলো ও স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া কোনও সমাধান নয়। বরং নির্বীজকরণ ও টিকাদানের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। তার মতে, আজ কুকুরদের নিয়ে এই সিদ্ধান্ত, কাল অন্য প্রাণী বা মানুষের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে।

কংগ্রেস সাংসদের প্রতিক্রিয়া

কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, আশ্রয়, নির্বীজকরণ, টিকাদান ও কমিউনিটি কেয়ারের মাধ্যমে রাস্তা নিরাপদ রাখা যায়—নিষ্ঠুরতা ছাড়াই।

নির্দেশ স্থগিতের আর্জি

বৃহস্পতিবার শুনানিতে পশুপ্রেমীরা নির্দেশের আংশিক স্থগিতাদেশ চান। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আবারও জানানো হয়, কুকুর মেরে ফেলার কথা নয়—তাদের শুধু জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে রাখা হবে। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে রায়দান স্থগিত রাখে।

দিল্লির পথকুকুর মামলা: প্রধান ঘটনাপ্রবাহের তালিকা

  • সোমবার: দুই বিচারপতির বেঞ্চ থেকে অবিলম্বে কুকুর সরানোর নির্দেশ।
  • বুধবার সকাল: নির্দেশের পরিপন্থী যুক্তি আদালতে উপস্থাপন।
  • বুধবার রাত: মামলা নতুন বেঞ্চে স্থানান্তর।
  • বৃহস্পতিবার: তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি, রায়দান স্থগিত।

দিল্লির পথকুকুর মামলা – তথ্যসংক্ষেপ টেবিলে

তারিখঘটনাপক্ষের অবস্থান
সোমবারকুকুর সরিয়ে জীবাণুমুক্ত করে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশপ্রশাসনের পক্ষে জননিরাপত্তা যুক্তি
বুধবার সকালনির্দেশের পরিপন্থী দাবিপশুপ্রেমীদের আপত্তি
বুধবার রাতমামলা নতুন বেঞ্চে পাঠানোপ্রধান বিচারপতির নির্দেশ
বৃহস্পতিবারশুনানি ও রায়দান স্থগিতউভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা

রাজধানীর পথকুকুর বিতর্কে জনমত ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

দিল্লি কুকুর মামলা ঘিরে বর্তমানে জনমত দুইভাগে বিভক্ত। একদিকে অনেকে মনে করেন, জননিরাপত্তা রক্ষায় রাজধানীর রাস্তায় থাকা কুকুরদের সরানো জরুরি। অন্যদিকে পশুপ্রেমীরা যুক্তি দিচ্ছেন, নির্বীজকরণ ও টিকাদান বাড়িয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

সুপ্রিম কোর্ট কুকুর ইস্যু নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত

আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পথকুকুর ইস্যু-তে চূড়ান্ত রায় দিতে গেলে আশ্রয়কেন্দ্র, চিকিৎসা ও নজরদারি—সব দিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু সরিয়ে নেওয়া নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করাও জরুরি।

দিল্লি কুকুর মামলা থেকে শিক্ষা

এই রাজধানীর পথকুকুর বিতর্ক দেখিয়ে দিয়েছে, শহুরে এলাকায় প্রাণী ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রশাসন, আদালত ও সমাজ একসঙ্গে কাজ করলে জননিরাপত্তা ও প্রাণীকল্যাণ—দুইই সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

দিল্লির পথকুকুর মামলা নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

দিল্লির পথকুকুর মামলা কী নিয়ে?

দিল্লির পথকুকুর মামলা মূলত রাজধানীর রাস্তায় থাকা কুকুরদের জননিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে। এতে প্রশাসন ও পশুপ্রেমী সংগঠন—দুই পক্ষের ভিন্ন মতামত সামনে এসেছে।

কেন দিল্লির পথকুকুর মামলা নতুন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে?

প্রথমে মামলাটি দুই বিচারপতির বেঞ্চে ছিল, কিন্তু নির্দেশের বিরোধিতা ও পূর্ববর্তী রায়ের সঙ্গে অসঙ্গতির অভিযোগ ওঠায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এটি তিন বিচারপতির নতুন বেঞ্চে স্থানান্তরিত হয়।

এই মামলায় প্রশাসনের অবস্থান কী?

প্রশাসনের মতে, দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চলে পথকুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কের ঘটনা বাড়ছে। তাই জননিরাপত্তার জন্য কুকুরদের আলাদা স্থানে নিয়ে নির্বীজকরণ ও টিকাদান করা প্রয়োজন।

পশুপ্রেমীদের আপত্তির কারণ কী?

পশুপ্রেমীরা বলছেন, রাজধানীতে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই, ফলে ধরা পড়া কুকুরদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এছাড়া, তারা মনে করেন জীবজন্তুর স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া সমাধান নয়।

দিল্লির পথকুকুর মামলার বর্তমান অবস্থা কী?

বর্তমানে মামলাটি নতুন বেঞ্চে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট রায়দান স্থগিত রেখেছে।

Table of Contents

Leave a Comment

রাশিফল লটারি রেজাল্ট পূজার দিন বিয়ের লগ্ন পূর্ণিমা আমাবস্যা ছুটি ঘোষণা শুভ দিন ফর্ম মক টেস্ট কুইজ নোটস আবহাওয়া সোনা দাম গ্যাস দাম
⬅️ ➡️