নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : হাইকোর্টের অনুমতি মামলা — প্রতিদিন রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে মিছিল-মিটিং নিয়ে আদালতের দৌড়ঝাঁপ যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারও সেই চিত্র দেখা গেল কলকাতা হাইকোর্টে, যেখানে তারাতলার এক জনসভাকে কেন্দ্র করে মামলা দায়েরের অনুমতি চাওয়া হলেও তা খারিজ করে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। রাজনৈতিক সভা নিয়ে এভাবে বারবার মামলা হওয়ায় বিচারপতি স্পষ্ট জানালেন, ভবিষ্যতে এমন অনুমতির জন্য জনস্বার্থ মামলা করেই ডিভিশন বেঞ্চে যেতে হবে।
হাইকোর্টে জনসভা অনুমতি মামলায় নতুন বার্তা
কলকাতার তারাতলা শিবমন্দির এলাকায় একটি রাজনৈতিক জনসভা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যেখানে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সভার অনুমতি চেয়ে মামলা দায়েরের আবেদন করেন আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু একক বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দিল, হাইকোর্টের অনুমতি মামলা এখন থেকে জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমেই হতে হবে।
রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে আদালতের দৃষ্টি বদল
রাজ্যের নানা প্রান্তে বিরোধী দলনেতার সভা ও মিছিল নিয়ে পুলিশি বাধা এবং অনুমতি সংক্রান্ত বিষয় বারবার আদালতে গড়াচ্ছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, একক বেঞ্চ আর এই ধরনের আবেদন শুনবে না। অর্থাৎ মিছিল বা জনসভা নিয়ে অনুমতি চাইলেই সরাসরি ডিভিশন বেঞ্চে যেতে হবে।
শুভেন্দুর পূর্ব অভিজ্ঞতা আদালতে
এটি প্রথম ঘটনা নয়। এর আগে বহুবার শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টে গিয়েছেন সভা করার অনুমতির জন্য। যেমন, গত মার্চে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় মিছিলের অনুমতি দেয় আদালত। তবে এবার হাইকোর্টের অনুমতি মামলা খারিজ হওয়ায় ভবিষ্যতের সভা আয়োজনের নিয়মে পরিবর্তন আসতে পারে।
রাজনৈতিক সভা অনুমতি প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য পরিবর্তন
এই রায়ের ফলে রাজনৈতিক দলগুলিকে এখন থেকে কিছু নিয়ম মেনে অনুমতির জন্য আবেদন করতে হতে পারে। আদালতের নির্দেশ স্পষ্ট— ভবিষ্যতে এ ধরনের আবেদন জনস্বার্থ মামলা আকারে হতে হবে, যাতে সরাসরি ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি করতে পারে।
রাজনৈতিক সভার অনুমতি পেতে নতুন ধাপগুলো হতে পারে:
- সংশ্লিষ্ট থানায় আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দেওয়া।
- অনুমতি না পেলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের।
- সরাসরি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি।
- আদালতের নির্দেশ মেনে সভা আয়োজন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সভা অনুমতি মামলার তালিকা
সাল/মাস | স্থান | বিষয় | ফলাফল |
---|---|---|---|
মার্চ 2025 | হলদিয়া | মিছিলের অনুমতি | অনুমতি প্রদান |
আগস্ট 2025 | তারাতলা | জনসভা অনুমতি মামলা | আবেদন খারিজ |
জানুয়ারি 2024 | বীরভূম | মিটিং অনুমতি মামলা | আংশিক অনুমতি |
আদালতের সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায়ের ফলে রাজনৈতিক মঞ্চে কিছুটা শৃঙ্খলা আসতে পারে। একদিকে প্রশাসনের জন্য সময় বাঁচবে, অন্যদিকে আদালতেরও মামলা চাপ কমবে। তবে বিরোধী দলগুলির কাছে এটি নতুন এক চ্যালেঞ্জ— হাইকোর্টের অনুমতি মামলা করতে হলে এখন আর সরাসরি একক বেঞ্চে যাওয়া যাবে না, বরং পুরো প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
হাইকোর্টের নির্দেশে রাজনৈতিক সভা অনুমতির প্রক্রিয়ায় নতুন মোড়
রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ের অনুমতি নিয়ে আদালতে বারবার মামলা হওয়ায় এবার স্পষ্ট নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতির মন্তব্য অনুযায়ী, এখন থেকে রাজনৈতিক সভা বা জনসভার জন্য অনুমতি চাওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি জনস্বার্থ মামলা আকারে ডিভিশন বেঞ্চে যেতে হবে। এই সিদ্ধান্তে অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তন আসবে।
জনসভা অনুমতির পুরনো ধারা ও বর্তমান রায়
পূর্বে রাজনৈতিক নেতা বা দলগুলো স্থানীয় থানায় আবেদন করে অনুমতি না পেলে একক বেঞ্চে মামলা করত। বহুবার এই ধারা অনুসরণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। কিন্তু বর্তমান রায় অনুযায়ী, আদালতের অনুমতি প্রক্রিয়া বদলে গেছে। এখন জনসভা, মিছিল কিংবা বড় আকারের রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য অনুমতি চাইতে হলে আইনি কাঠামো মেনে ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে হবে।
রাজনৈতিক কার্যক্রমে আদালতের ভূমিকা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন নির্দেশে আদালতের উপর মামলা চাপ কিছুটা কমবে এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে সহজ হবে। প্রশাসনের পক্ষেও অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা বাড়বে। এছাড়া, রাজনৈতিক দলগুলোকে এখন থেকে তাদের পরিকল্পনা আরও আগে থেকে সাজাতে হবে, কারণ অনুমতি পেতে সময় বেশি লাগতে পারে।
সভা অনুমতি সংক্রান্ত ভবিষ্যৎ চিত্র
এই নতুন নির্দেশ কার্যকর হলে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের জন্য পরিকল্পনা বদলানো অপরিহার্য হবে। জনসভা অনুমতির জন্য এখন শুধু থানায় আবেদন করলেই হবে না, বরং আইনগতভাবে প্রস্তুত হয়ে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জমা দিতে হবে। ফলে রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিচালনায় আরও শৃঙ্খলা ও আইনি কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা তৈরি হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
হাইকোর্টের অনুমতি মামলা বলতে কী বোঝায়?
হাইকোর্টের অনুমতি মামলা হলো এমন একটি আইনি প্রক্রিয়া, যেখানে রাজনৈতিক সভা, মিছিল বা জনসমাবেশ করার জন্য অনুমতি না পেলে আবেদনকারী হাইকোর্টে মামলা করে অনুমতি চায়। এই প্রক্রিয়ায় আদালত পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুমতি দিতে বা না দিতে পারে।
জনসভা বা মিছিলের জন্য হাইকোর্টের অনুমতি কীভাবে পাওয়া যায়?
প্রথমে সংশ্লিষ্ট থানায় অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। যদি আবেদন খারিজ হয় বা উত্তর না পাওয়া যায়, তবে হাইকোর্টের অনুমতি মামলা দায়ের করা হয়। এখন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এই ধরনের মামলা জনস্বার্থ মামলার আকারে ডিভিশন বেঞ্চে জমা দিতে হবে।
কেন হাইকোর্টের অনুমতি মামলা এখন ডিভিশন বেঞ্চে করতে হবে?
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বারবার একই ধরনের আবেদন একক বেঞ্চে আসায় আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই মিছিল ও জনসভা সম্পর্কিত হাইকোর্টের অনুমতি মামলা সরাসরি ডিভিশন বেঞ্চে শোনা হবে, যাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
শুভেন্দু অধিকারীর মামলার রায়ে কী পরিবর্তন আসতে পারে?
এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নেতারা বা দলগুলো সরাসরি একক বেঞ্চে না গিয়ে জনস্বার্থ মামলা আকারে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করবেন। ফলে হাইকোর্টের অনুমতি মামলা করার প্রক্রিয়া কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও তা হবে আরও কাঠামোবদ্ধ।