অশান্ত নেপাল: সেনা পাহারায় পশুপতিনাথ মন্দির, ৩৮ ভারতীয়ের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন

অশান্ত নেপাল এখন সেনার হাতে নিয়ন্ত্রণ, পশুপতিনাথ মন্দির পর্যন্ত হামলার মুখে পড়েছে। ভারতীয়দের ফেরাতে সক্রিয় হয়েছে দূতাবাস।

অশান্ত নেপাল পরিস্থিতিতে সেনা পাহারায় পশুপতিনাথ মন্দির ও ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরানো।
অশান্ত নেপালে সেনা পাহারায় পশুপতিনাথ মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
Ujjwal Dey

Published By Ujjwal Dey

Updated on: September 12, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : অশান্ত নেপাল প্রতিদিন নতুন নতুন সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। হিংসার আগুনে জ্বলছে দেশ, মন্দির পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না। সেনা পাহারায় রক্ষা পাচ্ছে ঐতিহাসিক পশুপতিনাথ মন্দির। অন্যদিকে ভারতীয় দূতাবাসের তৎপরতায় দেশে ফিরেছেন আটকে পড়া বহু ভারতীয়। প্রতিবেশী দেশের অশান্ত পরিস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ বেড়েছে ভারতসহ গোটা উপমহাদেশে।

সেনা পাহারায় পশুপতিনাথ মন্দির, অশান্ত নেপালে ধর্মীয় স্থানের ওপর হামলা

কাঠমান্ডুর বিখ্যাত পশুপতিনাথ মন্দিরও বাদ যায়নি চলমান অরাজকতার হাত থেকে। বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায়। তবে সেনাবাহিনীর সতর্কতায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে মন্দিরকে ঘিরে রেখেছে সেনা, গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়।

ভারতীয়দের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন, দূতাবাসের উদ্যোগে ৩৮ জন ফিরলেন দেশে

অশান্ত নেপাল থেকে বৃহস্পতিবার বিহারের রক্সৌল সীমান্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন ৩৮ জন ভারতীয় নাগরিক। তাঁদের মধ্যে ২২ জন অন্ধ্রপ্রদেশ ও ১৬ জন কর্নাটকের বাসিন্দা। বীরগঞ্জের রাষ্ট্রদূতের তত্ত্বাবধানে তাঁদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়। সীমান্তে প্রবেশের পর বিহার প্রশাসন দায়িত্ব নেয় এবং নিজ নিজ রাজ্যে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু করেছে।

ওলি সরকারের পতন, রাস্তায় নেমেছে উত্তেজিত জনতা

দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনে নামে তরুণ প্রজন্ম—‘জেন জি’। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন কেপি শর্মা ওলি। এরপর থেকেই দেশজুড়ে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ে। সংসদ ভবন থেকে শুরু করে একাধিক মন্ত্রী-নেতার বাড়ি পর্যন্ত ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ হয়। এমনকি রাস্তায় মন্ত্রীদের প্রকাশ্যে আক্রমণ করে জনতা। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথে নেপাল

ওলির পদত্যাগের পর নেপালের ক্ষমতা আপাতত সেনার হাতে। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি। তবে অশান্ত নেপাল পরিস্থিতি সামাল দিতে কতটা সফল হবে নতুন নেতৃত্ব, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। ভারত সরকারও প্রতিবেশী দেশের প্রতিটি ঘটনার দিকে কড়া নজর রাখছে।

তালিকা: অশান্ত নেপালে সাম্প্রতিক বড় ঘটনা

  • কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগ
  • মন্দির, সংসদ ভবন ও মন্ত্রীদের বাড়িতে ভাঙচুর
  • পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলার চেষ্টা
  • সেনার হাতে ক্ষমতা
  • অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা
  • ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরা

টেবিল: দেশে ফেরা ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা

রাজ্যসংখ্যা
অন্ধ্রপ্রদেশ২২ জন
কর্নাটক১৬ জন
মোট৩৮ জন

অশান্ত নেপাল বর্তমানে ভয়াবহ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ধর্মীয় স্থান থেকে রাজনৈতিক ভবন—কোনো জায়গাই রক্ষা পাচ্ছে না বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে। সেনা পাহারায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলি টিকে থাকলেও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রতিবেশী ভারতের জন্যও পরিস্থিতি সমান গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সীমান্তের এ পারের মানুষের জীবনযাত্রার ওপরও তার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।

অশান্ত নেপালের এই সংকট শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতা নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রদেশে পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় অর্থনীতিতে বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতি নেপালের সামগ্রিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমান অরাজক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে নেপালের প্রয়োজন স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান। বারবার সরকার পরিবর্তন, দুর্নীতি এবং জনঅসন্তোষ দেশটিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তিশালী নেতৃত্ব ও ন্যায়সঙ্গত নীতি ছাড়া অশান্ত নেপালের সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে।

নেপালের এই অস্থিরতা পর্যটন খাতেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। পশুপতিনাথ মন্দির, পোখরা, লুম্বিনীসহ গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণকারী কমে গেছে। হোটেল ব্যবসা, পরিবহন খাত এবং স্থানীয় শিল্পীরা এর ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দীর্ঘদিন এভাবে চললে নেপালের পর্যটননির্ভর অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকেও নেপালের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত বাণিজ্য, জলসম্পদ প্রকল্প এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারত সর্বদা প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতা কামনা করে। অশান্ত নেপাল ভারতের উত্তরবঙ্গ ও বিহার সীমান্তে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ভারত সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যাতে খুব দ্রুত নেপাল আবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরতে পারে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী : অশান্ত নেপাল

অশান্ত নেপাল পরিস্থিতির মূল কারণ কী?

নেপালে অরাজকতার মূল কারণ হলো দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ওলি সরকারের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন ক্রমে ভয়াবহ রূপ নেয়। এর জেরে দেশজুড়ে হিংসা, ভাঙচুর এবং অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে, যা বর্তমানে অশান্ত নেপালের চিত্র তৈরি করেছে।

পশুপতিনাথ মন্দির কেন সেনা পাহারায় ঘেরা হলো?

বিক্ষোভকারীরা মন্দিরে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। ঘটনাটি রোধ করতে সেনা দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং মন্দিরকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। এখনো অশান্ত নেপালে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি সেনা পাহারায় রক্ষিত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় নাগরিকদের কীভাবে দেশে ফেরানো হয়েছে?

অশান্ত নেপাল থেকে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে ভারতীয় দূতাবাস সক্রিয় ভূমিকা নেয়। কাঠমান্ডু থেকে বীরগঞ্জ সীমান্ত হয়ে রক্সৌল দিয়ে ৩৮ জনকে ভারতে ফেরানো হয়। তাঁদের মধ্যে ২২ জন অন্ধ্রপ্রদেশ ও ১৬ জন কর্নাটকের বাসিন্দা ছিলেন।

ওলি সরকারের পতনের পর নেপালের ক্ষমতা কার হাতে?

ওলি সরকারের পতনের পর আপাতত সেনার হাতে ক্ষমতা এসেছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা হিসেবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অশান্ত নেপালের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে নতুন নেতৃত্ব কতটা সক্ষম হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

অশান্ত নেপাল ভারতের উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে?

প্রতিবেশী দেশ নেপালের এই অস্থিরতা ভারতের নিরাপত্তা ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সীমান্ত এলাকার বাণিজ্য, পর্যটন এবং সামাজিক সম্পর্কেও অশান্ত নেপালের প্রভাব পড়তে পারে।

Leave a Comment

রাশিফল লটারি রেজাল্ট পূজার দিন বিয়ের লগ্ন পূর্ণিমা আমাবস্যা ছুটি ঘোষণা শুভ দিন ফর্ম মক টেস্ট কুইজ নোটস আবহাওয়া সোনা দাম গ্যাস দাম
⬅️ ➡️