SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক: মণীষা সিকদারকে ঘিরে রাজনৈতিক ও সামাজিক তোলপাড়

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক ঘিরে রাজ্যে চলছে উত্তপ্ত আলোচনা। মণীষা সিকদার প্রথমে বলেছিলেন পরীক্ষা দেবেন না, অথচ শেষে পরীক্ষায় অংশ নিতেই দেখা গেল তাঁর নাম।

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্কে মণীষা সিকদারকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে আলোচনার ঝড়
SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্কে মণীষা সিকদারকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে আলোচনার ঝড়
Ujjwal Dey

Published By Ujjwal Dey

Updated on: September 17, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক সাম্প্রতিককালে এক এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মণীষা সিকদারকে নোয়া খুলে পরীক্ষা দিতে বলা হয়। প্রথমে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি দাবি করেন, নোয়া খুলতে হবে শুনেই পরীক্ষা দেবেন না। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেল, এসএসসি পরীক্ষার তালিকায় তাঁর নাম আছে এবং তিনি পরীক্ষায় বসেছেনও। বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর থেকে আইনি মন্তব্য—সব মিলিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

মণীষা সিকদারকে ঘিরে বিতর্কিত SSC পরীক্ষা

পূর্ব বর্ধমানের মেয়ে মণীষা সিকদার সম্প্রতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বিয়ের কিছুদিন পরেই তিনি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের SSC পরীক্ষা দিতে হাজির হন কালনা হিন্দু গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে। হাতে ছিল বিয়ের নোয়া। পরীক্ষার আগে তাঁকে বলা হয়, ধাতব জিনিস হলে অনুমোদন নেই, তাই নোয়া খুলতে হবে।

সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মণীষা বলেছিলেন, “এক মাস হলো বিয়ে হয়েছে। এখন আবার নোয়া খুলতে বলছে, আমি পরীক্ষা দেব না।” কিন্তু পরে এসএসসি সূত্রে জানা যায়, তিনি নোয়া খুলেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আর সেই বিষয়টাই নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে অনেকের মনে।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কথা

আইনজীবী ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে কড়া মন্তব্য করেছেন। তাঁর অভিযোগ, মণীষা সংবাদমাধ্যমের সামনে ভিন্ন কথা বলে প্রচার পেয়েছেন, অথচ ভেতরে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন।

কল্যাণের বক্তব্য:

  • “মণীষা সিকদার প্রেসের কাছে ওসব বলেছিলেন। যাতে প্রচার হয়। কিন্তু তিনি ফিরে গিয়ে আবার পরীক্ষাও দিয়েছেন। যদি পাশ করেন, তাহলে চাকরি পাবেন।”
  • নিরাপত্তার যুক্তি দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “হিজাবের মধ্যে তো ধাতব কিছু থাকে না। কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রেও তো বেল্ট খুলতে হয়। আমাকেও একবার বিদেশে গিয়ে পইতে খুলতে হয়েছিল। সিকিউরিটি গাইডলাইন মানতেই হবে।”

বিজেপির পাল্টা প্রশ্ন

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, পরীক্ষায় কেন নোয়া খুলতে বলা হবে অথচ হিজাব নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না? তাঁদের বক্তব্য, এই নিয়মে স্পষ্ট বৈষম্য রয়েছে। যদিও এসএসসি ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলেছেন, বিষয়টি শুধু নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মের অংশ, ব্যক্তিগত বিশ্বাসের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।

ঘটনাস্থল ও প্রেক্ষাপট

  • স্থান: কালনা হিন্দু গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব বর্ধমান
  • তারিখ: রবিবার
  • পরীক্ষা: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ (SSC)
  • প্রার্থীর নাম: মণীষা সিকদার

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক – মূল পয়েন্টগুলো

বিষয়বিস্তারিত
প্রার্থীমণীষা সিকদার, পূর্ব বর্ধমান
ঘটনাপরীক্ষা দেওয়ার আগে নোয়া খুলতে বলা হয়
প্রতিক্রিয়াসংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন পরীক্ষা দেবেন না
বাস্তবএসএসসি তালিকায় নাম রয়েছে, পরীক্ষা দিয়েছেন
মন্তব্যকল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির পাল্টা সুর
কারণপরীক্ষায় ধাতব জিনিস বহনে নিষেধাজ্ঞা

শেষকথা

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক শুধু একজন পরীক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং নিরাপত্তা নীতি বনাম ধর্মীয়/সাংস্কৃতিক চর্চার সংঘাতকে সামনে এনে দিয়েছে। যদিও নিয়ম অনুযায়ী ধাতব জিনিস পরীক্ষাকক্ষে রাখা যায় না, কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে আলোচনার ঝড় বইছে।

বর্তমানে SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এই ঘটনাকে অনেকে বলছেন “এসএসসি নোয়া কাণ্ড”, আবার কেউ একে “পরীক্ষায় অলঙ্কার নিষেধাজ্ঞা” হিসেবে দেখছেন। আসলে বিষয়টির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পরীক্ষার নিরাপত্তা নীতি। ধাতব গয়না, বেল্ট, হাতঘড়ি বা অন্য কোনও জিনিস পরীক্ষার হলে অনুমোদিত নয়—এই সাধারণ নিয়মকেই কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এত বড় বিতর্ক।

অন্যদিকে শিক্ষাজগতের অনেকেই বলছেন, পরীক্ষায় নোয়া খুলতে বলা আসলে নতুন কিছু নয়। বরাবরই পরীক্ষায় ধাতব বস্তু নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে। তবে মণীষা সিকদার প্রথমে সংবাদমাধ্যমে অন্য রকম দাবি করায় ঘটনাটি জনসমক্ষে তোলপাড় করেছে। এ জন্যই সাধারণ নিয়ম থেকেও এটি এক ব্যতিক্রমী বিতর্কের চেহারা নিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, “নোয়া সংক্রান্ত এসএসসি ইস্যু” এখন আর শুধু একটি পরীক্ষার নিয়ম মানা-না-মানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের নতুন ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে, আর সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি আবেগের জায়গা ছুঁয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের একাংশ মনে করছেন, ভবিষ্যতে এমন কোনও ঘটনা এড়াতে পরীক্ষার আগে স্পষ্টভাবে সব নিয়ম জানানো উচিত। “এসএসসি পরীক্ষার নোয়া বিতর্ক” থেকে শিক্ষা নিয়ে বোর্ড চাইলে আলাদা নোটিশ প্রকাশ করতে পারে, যেখানে উল্লেখ থাকবে কী কী অলঙ্কার বা জিনিস পরীক্ষার হলে অনুমোদিত নয়। এতে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষাকেন্দ্র—দুই পক্ষেরই সুবিধা হবে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, SSC নোয়া বিতর্ক কেবলমাত্র একজন পরীক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়। এটি নিরাপত্তা, ধর্মীয় অনুভূতি, সামাজিক প্রথা এবং রাজনৈতিক কৌশলের মিশেলে এক বহুল আলোচিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। তাই ভবিষ্যতে যখন মানুষ “SSC নোয়া কাণ্ড”, “পরীক্ষায় অলঙ্কার নিষিদ্ধ”, “এসএসসি বিতর্ক” বা “পরীক্ষার নিরাপত্তা নিয়ম” সার্চ করবে, তখনও এই ঘটনার তথ্য তাদের সামনে আসবে।

বিজ্ঞাপন

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর

মণীষা সিকদার কেন খবরের শিরোনামে এলেন?

মণীষা সিকদার পূর্ব বর্ধমানের এক ছাত্রী, যিনি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের SSC পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে নোয়া খুলতে বলা হলে প্রথমে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান যে পরীক্ষা দেবেন না। কিন্তু পরে দেখা যায় তিনি পরীক্ষায় বসেছেন। এ কারণেই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

SSC পরীক্ষা হলে নোয়া নিয়ে বিতর্ক কেন?

SSC পরীক্ষা হলে নিরাপত্তার কারণে কোনও ধাতব জিনিস অনুমোদিত নয়। নোয়া যেহেতু ধাতব অলঙ্কার, তাই সেটি খুলে রাখতে বলা হয়েছিল। এখান থেকেই SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক শুরু হয়।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেছেন এই ঘটনা নিয়ে?

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মণীষা বাইরে সাংবাদিকদের সামনে একরকম মন্তব্য করেছেন, অথচ ভিতরে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর মতে, পরীক্ষার নিরাপত্তা নীতি সবার জন্যই সমান, হিজাবের সঙ্গে এর তুলনা করা ঠিক নয়।

বিজেপি কেন এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে?

বিজেপির দাবি ছিল, নোয়া খুলতে বলা হচ্ছে অথচ হিজাব নিয়ে কিছু বলা হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, এখানে বৈষম্য করা হয়েছে। এই কারণেই SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক রাজনৈতিক রঙ পেয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের কি সব ধরনের ধাতব জিনিস খুলতে হয়?

হ্যাঁ, পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের বেল্ট, গয়না, এমনকি ছোট ধাতব জিনিসও খুলতে হয়। এটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক।

এই বিতর্কের ফলাফল কী হতে পারে?

ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এটি নিরাপত্তা নীতি ও ব্যক্তিগত বিশ্বাসের মধ্যে সংঘাতের উদাহরণ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এসএসসি আরও স্পষ্ট গাইডলাইন দিতে পারে যাতে এমন বিতর্ক আর না হয়।

নোয়া খুলে পরীক্ষা দেওয়ায় চাকরির সুযোগে প্রভাব পড়বে কি?

না, যদি মণীষা সিকদার পরীক্ষায় সফল হন, তবে অন্যদের মতোই চাকরির সুযোগ পাবেন। নোয়া নিয়ে বিতর্ক তাঁর ফলাফলে প্রভাব ফেলবে না।

SSC পরীক্ষা নোয়া বিতর্ক কেন এত আলোচিত হলো?

কারণ বিষয়টি একদিকে একজন নতুন বিবাহিত মহিলার ব্যক্তিগত আবেগকে ছুঁয়েছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলিও বিষয়টিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাই এটি সাধারণ পরীক্ষার ঘটনা থেকে বড় বিতর্কে পরিণত হয়েছে।

Leave a Comment

রাশিফল লটারি রেজাল্ট পূজার দিন বিয়ের লগ্ন পূর্ণিমা আমাবস্যা ছুটি ঘোষণা শুভ দিন ফর্ম মক টেস্ট কুইজ নোটস আবহাওয়া সোনা দাম গ্যাস দাম
⬅️ ➡️
×