নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ ঘিরে আজ উত্তাল হয়ে উঠল দেশের রাজধানী। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে সংসদ ভবন থেকে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত মিছিল করতে গেলে দিল্লি পুলিশের বাধায় শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তৃণমূলের দুই সাংসদ অসুস্থ হয়ে পড়েন, আর ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টায় চোখে পড়ে বহু নেতার দৃঢ় অবস্থান। আটক হন রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, মহুয়া মৈত্র, সঞ্জয় রাউত-সহ একাধিক বিশিষ্ট নেতা-নেত্রী। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক মহলে।
বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদে দিল্লি উত্তাল
আজ সকালে সংসদের মকর দ্বার থেকে বিরোধী জোটের সাংসদরা ‘ভোট চুরির’ অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। মিছিলের শুরু থেকেই ‘ভোট চোর’ স্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ। তবে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই বিপুল সংখ্যক সাংসদ একত্রিত হওয়ায় দিল্লি পুলিশ তাদের আটকায়। এ সময় একদিকে চলতে থাকে রাজনৈতিক বক্তব্য, অন্যদিকে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি।
রাহুল-প্রিয়ঙ্কা থেকে মহুয়া — কারা কারা আটক হলেন
আটক হওয়া সাংসদদের মধ্যে ছিলেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, মহুয়া মৈত্র, সঞ্জয় রাউত, সাগরিকা ঘোষ-সহ বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাদের পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছানোর অনুমতি ছিল মাত্র ৩০ জন সাংসদের জন্য, কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার অনেক গুণ বেশি। এই কারণেই আটক করা হয় তাদের।
ধস্তাধস্তি ও অসুস্থতার ঘটনা
প্রতিবাদ কর্মসূচির মাঝে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় যখন পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয়। এসময় তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে সহায়তা করেন রাহুল গান্ধী ও অন্যরা। অপরদিকে, বাসের ভিতরে জ্ঞান হারান মহুয়া মৈত্র।
অখিলেশ যাদবকে দেখা যায় ব্যারিকেড টপকে স্লোগান দিতে, যা মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
আটক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের তালিকা
ক্র. | নাম | দল | পদবি |
---|---|---|---|
১ | রাহুল গান্ধী | কংগ্রেস | বিরোধী দলনেতা |
২ | প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা | কংগ্রেস | সাধারণ সম্পাদক |
৩ | মহুয়া মৈত্র | তৃণমূল কংগ্রেস | সাংসদ |
৪ | মিতালি বাগ | তৃণমূল কংগ্রেস | সাংসদ |
৫ | সঞ্জয় রাউত | শিবসেনা | সাংসদ |
৬ | সাগরিকা ঘোষ | স্বতন্ত্র | রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক |
৭ | অখিলেশ যাদব | সমাজবাদী পার্টি | সভাপতি |
বিজেপির পাল্টা অভিযোগ
ঘটনার পর বিজেপি কংগ্রেসকে তীব্র সমালোচনা করে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অভিযোগ করেন, বিরোধীরা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। তার মতে, এই ধরনের ‘বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ’ আসলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে ভুল ধারণা তৈরি করার চেষ্টা।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা
- নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
- পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ও পদক্ষেপ
- বিরোধী ঐক্যের ভবিষ্যৎ রূপরেখা
- রাজনীতিতে জনমত গঠনের কৌশল
বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ আসলে কী নিয়ে?
বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ মূলত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ভোট জালিয়াতি বা অনিয়মের অভিযোগকে ঘিরে আয়োজিত বিক্ষোভ। বিরোধী দলগুলির দাবি, ভোট গণনা ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নেই এবং নির্বাচন কমিশনের উচিত এর সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
এই প্রতিবাদে কোন কোন নেতা অংশ নিয়েছিলেন?
এই প্রতিবাদে অংশ নেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, মহুয়া মৈত্র, মিতালি বাগ, সঞ্জয় রাউত, সাগরিকা ঘোষ, অখিলেশ যাদব-সহ বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীরা।
কেন পুলিশ বিরোধী নেতাদের আটক করেছিল?
দিল্লি পুলিশ জানায়, নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছানোর অনুমতি ছিল মাত্র ৩০ জন সাংসদের জন্য। কিন্তু মিছিলে অংশ নেন তার অনেক বেশি নেতা, যার ফলে পুলিশের তরফে ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল থামানো হয় এবং বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী বহু সাংসদকে আটক করা হয়।
এই ঘটনায় কারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন?
মিছিল চলাকালীন ধস্তাধস্তির সময়ে তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বাসের ভিতরে জ্ঞান হারান মহুয়া মৈত্র। দুজনকেই সহকর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, বিরোধীদের ভোট চুরি প্রতিবাদ আসলে জনমনে ভুল বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি, বিরোধীরা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।