বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক! Voter List Scandal নিয়ে Election Commission-এর তদন্ত শুরু

“বিদেশি নাগরিক কীভাবে বিহারের ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়ল—এই প্রশ্নের উত্তরই বদলে দিতে পারে আসন্ন নির্বাচন!”

বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক! বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়ানমারের নাগরিকদের নাম ঘিরে বিতর্ক
Foreign Voters Found in Bihar Voter List
বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক!
Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি, বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক : বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে বড়সড় চাঞ্চল্য! নির্বাচন কমিশনের নিরীক্ষায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য—ভোটার তালিকায় মিলেছে বাংলাদেশ, নেপাল এবং মায়ানমারের বহু নাগরিকের নাম। এখনও পর্যন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারি ঘোষণা না এলেও, সূত্র মারফত পাওয়া তথ্যেই তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে ভোটার পরিচয় যাচাই নিয়ে, এবং তাতেই মাথাব্যথা শুরু করেছে প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত।

‌বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিকের খোঁজ! বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য দিল বুথকর্মীরা

বিহারের আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধনের (SIR) কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই প্রক্রিয়ায় বুথ স্তরের আধিকারিকরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচয় যাচাই করছেন। আর এই যাচাইয়ের সময়ই উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য—তালিকায় রয়েছে বহু বিদেশি ভোটার।
বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়ানমারের নাগরিকরা বিহারে বসবাস করছেন এবং ভোটার তালিকায় তাদের নাম উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে কমিশন সূত্র। তবে এখনো কমিশনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কীভাবে ধরা পড়ল এই অবৈধ ভোটারদের নাম?

বুথ পর্যায়ের কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভোটারের নাম, ঠিকানা, ও পরিচয়পত্র যাচাই করছেন। এই সময়ই দেখা গেছে, অনেকেই কোনও ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ দিতে পারেননি।
এমনকি অনেক পরিযায়ী শ্রমিক নিজের আসল পরিচয় গোপন করে তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন বলে সন্দেহ। ১ অগস্ট থেকে এই সমস্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।

ভোটার যাচাইয়ের জন্য কমিশনের নয়া নির্দেশিকা

কমিশন ২৫ জুন থেকে শুরু করেছে SIR (Special & Intensive Revision) কার্যক্রম। প্রত্যেক ভোটারকে একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছে, যা জমা নেওয়া হবে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে।
এই যাচাইয়ের জন্য ১১টি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র গ্রহণযোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে অবাক করা বিষয়, এখানে আধার কার্ড বা রেশন কার্ড নেই।

গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্র (কমিশন নির্ধারিত):

ক্রমিকনথির নাম
ভোটার কার্ড (EPIC)
পাসপোর্ট
ড্রাইভিং লাইসেন্স
জন্ম সনদ
ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রেশন কাগজ
স্টেট গভঃ আইডি
প্যান কার্ড
সরকারি চাকরির পরিচয়পত্র
ব্যাংক পাসবই
১০শিক্ষাগত সনদপত্র
১১বিদ্যুৎ বিলের কপি

বিরোধীদের অভিযোগ: ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা

বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়টি যতটা চমকপ্রদ, ততটাই বিতর্কিতও। বিরোধীরা অভিযোগ করছে, এই নতুন ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারে।
অনেকেই বছরের পর বছর ধরে ভোট দিয়ে এসেছেন, কিন্তু হঠাৎ করে তাঁদের ভোটাধিকার প্রমাণ করতে বলা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে “নির্বাচনী বিভাজন” বলেও আখ্যা দিয়েছেন অনেকে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলা, মহুয়া মৈত্রদের আরজি

এই বিতর্কিত তালিকা যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সহ অনেকেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। তাঁদের দাবি, এই কার্যক্রম স্থগিত করা হোক এবং অন্য রাজ্যেও যাতে এমন নির্দেশ না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করুক আদালত।
১০ জুলাই এই মামলাগুলো একসাথে শুনানি হয়েছে। আপাতত আদালত হস্তক্ষেপ করেনি তবে কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য আধার, রেশন, ভোটার কার্ডও বিবেচনা করতে।

বর্তমানে যাচাইয়ের অগ্রগতি কতটা?

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৮০.১১% ফর্ম ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ জন ভোটারের মধ্যে চার জন ইতিমধ্যেই নিজের পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন।

বর্তমান পরিসংখ্যান (১২ জুলাই পর্যন্ত):

বিবরণসংখ্যা/শতাংশ
ফর্ম বিলি করা হয়েছে১০০%
জমা পড়েছে৮০.১১%
সন্দেহভাজন বিদেশি নাগরিকঅজানা (তদন্তাধীন)
খসড়া তালিকা প্রকাশ১ অগস্ট
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা৩০ সেপ্টেম্বর

‌নাগরিকত্ব যাচাই নাকি ভোটাধিকার সংকট?

প্রশ্ন উঠছে—এই উদ্যোগ বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক দূর করার জন্য, নাকি নিরীহ ভারতীয়দের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য? একদিকে প্রশাসনের উদ্বেগ ঠিক হলেও, অন্যদিকে ভোটারদের দুর্ভোগও অস্বীকার করা যায় না।
তালিকা থেকে বাদ পড়লে পুনরায় নাম তোলা, তথ্য প্রমাণ জোগাড়—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল।

বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক থাকা মানে শুধু নির্বাচন ব্যবস্থার ত্রুটি নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ও। নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ যদি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে গণতন্ত্র আরও স্বচ্ছ হতে পারে। তবে এর অপব্যবহার হলে সাধারণ মানুষকেই তার মূল্য দিতে হবে।

নিচে প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক ও SEO-ফ্রেন্ডলি FAQ (Frequently Asked Questions) অংশটি দেওয়া হলো, যাতে পাঠকরা দ্রুত ও সংক্ষেপে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন। এতে “বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক” ফোকাস কিওয়ার্ড ও তার পরোক্ষ রূপগুলোও সুনিপুণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে:

প্রশ্নোত্তর বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক সম্পর্কিত (FAQ)

প্রশ্ন ১: বিহারের ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিকদের নাম কীভাবে ধরা পড়ল?

উত্তর: নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বুথকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের পরিচয় যাচাই করেন। এই যাচাইয়ের সময় অনেকের কাছে বৈধ ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র না থাকায় তাঁদের সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রশ্ন ২: কোন কোন দেশের নাগরিকের খোঁজ মিলেছে ভোটার তালিকায়?

উত্তর: কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়ানমারের নাগরিকদের নামই ভোটার তালিকায় পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে অনেকেই পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বিহারে বসবাস করছেন।

প্রশ্ন ৩: নির্বাচন কমিশন কি এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানিয়েছে?

উত্তর: না, এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে কমিশনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকরা বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।

প্রশ্ন ৪: ভোটার তালিকা সংশোধনে কী ধরনের পরিচয়পত্র লাগবে?

উত্তর: নির্বাচন কমিশন ১১টি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্রের তালিকা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম সনদ ইত্যাদি। আধার ও রেশন কার্ড গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রশ্ন ৫: এই যাচাই প্রক্রিয়ায় সাধারণ ভোটাররা কি সমস্যায় পড়বেন?

উত্তর: বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, এই প্রক্রিয়ায় বহু প্রকৃত ভারতীয় ভোটারও বাদ পড়তে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের হঠাৎ করে পরিচয় প্রমাণ করতে বলা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

প্রশ্ন ৬: এই ইস্যু নিয়ে আদালতে কোনও মামলা হয়েছে কি?

উত্তর: হ্যাঁ, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সহ আরও কয়েকজন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। তাঁদের দাবি, বিহারের এই ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া অবিলম্বে স্থগিত করা হোক এবং অন্য রাজ্যেও এমন না হয় তা নিশ্চিত করুক আদালত।

প্রশ্ন ৭: চূড়ান্ত ভোটার তালিকা কবে প্রকাশিত হবে?

উত্তর: কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, খসড়া তালিকা প্রকাশ হবে ১ অগস্টে, এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে।

প্রশ্ন ৮: কত শতাংশ ভোটার ইতিমধ্যেই ফর্ম জমা দিয়েছেন?

উত্তর: নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে, ৮০.১১% ভোটার ইতিমধ্যেই ফর্ম জমা দিয়েছেন। বাকিদের কাছ থেকেও দ্রুত ফর্ম নেওয়ার কাজ চলছে।

প্রশ্ন ৯: যারা বিদেশি প্রমাণিত হবে, তাঁদের কী হবে?

উত্তর: যাঁরা বৈধ ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হবেন, তাঁদের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। এছাড়া তাঁদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।

প্রশ্ন ১০: এই ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য কতটা চিন্তার?

উত্তর: একদিকে ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক থাকা গণতন্ত্রের স্বচ্ছতার পক্ষে বিপজ্জনক, আবার অন্যদিকে সাধারণ ভারতীয় ভোটারদের হেনস্তা হলে সেটা বড় সংকট হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ।

Table of Contents

Leave a Comment