রাজ্যের প্রতিটি পাড়ায় এবার সরাসরি সমাধান—রাস্তা, জল, আলো সবকিছু মিলিয়ে আসছে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প। পাড়ার ছোট সমস্যা আর ফাইলচাপা নয়, এবার মাটি থেকে মিলবে বাস্তব সমাধান।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প প্রতিদিন আমাদের আশেপাশের পাড়ায় ছোট ছোট সমস্যাগুলো দিনের পর দিন থেকে যায় — কখনও কল নেই, কখনও রাস্তা ভাঙা, কখনও আবার স্কুলের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। এবার এসব সমস্যার সরাসরি সমাধান নিয়ে এসেছে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে শুরু হচ্ছে এই নতুন কর্মসূচি, যেখানে বুথভিত্তিক জনসাধারণের সমস্যার কথা শুনে, দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেবেন সরকারি আধিকারিকরা।
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’ কী এবং কেন?
রাজ্যের প্রতিটি পাড়ার ছোটখাটো সমস্যা, যা বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকে — এবার সেই সমস্যা একেবারে পাড়াতেই সমাধান করা হবে। তিনটি বুথ নিয়ে তৈরি হবে একটি পাড়া। প্রতি বুথের জন্য আলাদা করে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। এই উদ্যোগের নামেই বোঝা যাচ্ছে — “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প” মানুষের পাশে থাকার এক নতুন অধ্যায়।
গ্রামের ছোট সমস্যা, বড় সমাধান
এই কর্মসূচির আওতায় পাড়ার নিত্য ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে —
- রাস্তাঘাটের অবস্থা
- পানীয় জলের কল
- বিদ্যুৎ সমস্যা
- স্কুল ভবনের ছাদ
- ICDS সেন্টারের পাঁচিল বা ছাদ
এখন আর বারবার ব্লক অফিসে দৌড়াতে হবে না। বরং পাড়ায় শিবিরেই মিলবে প্রতিকার।
প্রতিটি বুথে থাকবে অফিসার, শুনবেন পাড়ার সমস্যা
তিনটি বুথ নিয়ে গড়ে উঠবে একটি শিবির, যেখানে সারাদিন থাকবেন সরকারি আধিকারিকরা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হবে কী কী কাজ অগ্রাধিকার পাবে।
এই শিবিরে থাকবে ‘দুয়ারে সরকার’ ডেস্কও, যেখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা, স্বাস্থ্যসাথী-সহ নানা সরকারি প্রকল্পে আবেদন করা যাবে।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্পে কী কী সুবিধা মিলবে?
সরাসরি সুবিধাগুলি:
- জল, আলো, রাস্তার সমস্যা দ্রুত মেটানো
- স্কুল বা ICDS সেন্টারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন
- সরকারি স্কিমে সহজে আবেদন
- মিউটেশন বা জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান
- সরকারি অফিসারদের সরাসরি উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে কাজ বাছাই
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ও দৃষ্টিভঙ্গি
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেন –
“ছোট ছোট সমস্যাগুলো যেন আর অবহেলায় না পড়ে থাকে। একটা পোল বসানো, কল লাগানো, স্কুলের ছাদ মেরামত — এসবই কিন্তু মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। এবার সেই সমস্যার মাটি থেকে সমাধান হবে, মানুষ যেখানেই থাকুন না কেন।”
অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে কাজ হবে আরও দ্রুত
কাজের স্বচ্ছতা ও গতির কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পের সব কার্যকলাপ হবে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে। এর ফলে কাজের অগ্রগতি সহজেই জানা যাবে, এবং মানুষের বিশ্বাসও বাড়বে। এই উদ্যোগে যুক্ত হতে আগ্রহী যেকোনও ব্যক্তি শিবিরে উপস্থিত থেকে নিজের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন।
প্রযুক্তির সহায়তায় মানুষের পাশে সরকার
এই প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক্তি, প্রশাসন এবং জনসম্পৃক্ততা — সব মিলিয়ে এক অভিনব মিশ্রণ। আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং তা মানুষের হাত ধরার এক বাস্তব উদাহরণ।
প্রকল্পের মূল দিকগুলো এক নজরে (টেবিল)
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
প্রকল্পের নাম | আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প |
শুরু হচ্ছে | ২ অগাস্ট থেকে |
চলবে | ২ মাস ধরে |
প্রতি বুথে বরাদ্দ | ১০ লক্ষ টাকা |
মোট বাজেট | ৮ হাজার কোটি টাকা |
শিবির গঠন | প্রতি ৩টি বুথে একটি শিবির |
মূল সুবিধা | রাস্তা, জল, আলো, স্কুল, সরকারি স্কিম ইত্যাদি |
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’-এর কার্যকর প্রভাব কী হবে?
এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তিক অঞ্চলে উন্নয়নের হাওয়া পৌঁছাবে। শুধু সরকারি কাজের জটিলতা নয়, মানুষের মনেও তৈরি হবে স্বস্তির জায়গা। ‘সরকার পাশে আছে’ — এই বিশ্বাসটা গড়ে তুলবে এই প্রকল্প।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প: রাজ্যের প্রতিটি মানুষের দুয়ারে এবার সরাসরি সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ
মুখ্যমন্ত্রীর নতুন পদক্ষেপ: সাধারণ মানুষের জন্য এক অভিনব স্কিম
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নতুন উদ্যোগ ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ প্রকল্প রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তিক পাড়ায় পৌঁছে দেবে সরকারি পরিষেবা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, এবার আর দূরে নয়, মানুষের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সরকারি আধিকারিকরা শুনবেন তাদের সমস্যা, দেবেন সমাধান।
পাড়ায় পাড়ায় সমস্যা মেটাতে সরকারি তহবিল
এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার মোট ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রতিটি বুথে দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ। তিনটি বুথ নিয়ে গঠিত একেকটি পাড়ায় তৈরি হবে শিবির। সেখানেই হবে পরিকাঠামো উন্নয়ন, যেমন:
- রাস্তা সংস্কার
- পানীয় জলের লাইন
- বিদ্যুৎ সংযোগ
- আইসিডিএস কেন্দ্র সংস্কার
- স্কুলে ছাদ বা পাঁচিল মেরামতি
দুয়ারে সরকার-এর সম্প্রসারিত রূপ
এই প্রকল্পটি দুয়ারে সরকার স্কিমের সম্প্রসারিত রূপ, যেখানে শুধু সরকারি প্রকল্পে আবেদন নয়, বরং সরাসরি পরিকাঠামোগত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পে থাকছে:
- স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতার আবেদন সুবিধা
- মিউটেশন সংক্রান্ত সাহায্য
- সরকারি কর্মচারীদের সরাসরি উপস্থিতি
- অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধান নির্দেশ
সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার ব্যবস্থা
প্রতিটি শিবিরে সারাদিন থাকবেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সাধারণ মানুষ বলতে পারবেন পাড়ায় কী সমস্যায় পড়ছেন। আলোচনা করে ঠিক করা হবে, কোন সমস্যাটি আগে সমাধানযোগ্য। পুরো প্রক্রিয়া চলবে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে—যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা: এই প্রকল্প মানুষের প্রকৃত সমস্যার সমাধানের জন্য
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ছোট ছোট সমস্যাগুলো—যেমন একটা কল বসানো, পোল বসানো, একটা স্কুলের ছাদ মেরামতি—এখন থেকে আর ফাইলচাপা পড়ে থাকবে না। আমাদের আধিকারিকরা পাড়ায় গিয়ে শুনবেন এবং সমাধান করবেন।”
কেন এই প্রকল্প এত গুরুত্বপূর্ণ?
- শহরের তুলনায় গ্রামে পরিকাঠামোগত সমস্যা বেশি
- সরকারি প্রকল্পের সুযোগ প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছায় না
- গ্রামীণ উন্নয়নই রাজ্যের সার্বিক অগ্রগতির চাবিকাঠি
- সরাসরি মানুষের সংস্পর্শে প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু হওয়ায় মানুষ বেশি আস্থা পাবে
এই প্রকল্প কাদের জন্য?
এই প্রকল্প উপকৃত করবে:
- প্রান্তিক গ্রামবাসী
- দুস্থ ও গরিব পরিবার
- নারী ও শিশু কেন্দ্রিক সুবিধা প্রার্থীরা
- মিউটেশন বা জমি সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগা নাগরিক
এরপরে কোন ধরনের টপিক নিয়ে আলোচনা দেখতে চান এগুলোর মধ্যে জানাও কমেন্ট করে
- পাড়া উন্নয়ন প্রকল্প
- পশ্চিমবঙ্গের নতুন স্কিম
- মমতার গ্রামীণ উন্নয়ন
- সরাসরি সরকার পরিষেবা
- রাজ্য সরকার পাড়ায় সাহায্য
- গ্রামীণ সমস্যার সমাধান প্রকল্প
মানুষের পাশে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান
রাজ্যের এই উদ্যোগ সত্যিই যুগান্তকারী। প্রতিটি মানুষ যদি তাঁর সমস্যার জন্য পাড়ার মধ্যেই সমাধান পান, তাহলে রাজ্য প্রশাসনের ওপর আস্থা আরও দৃঢ় হবে। এক কথায়, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ প্রকল্প রাজ্যবাসীর কাছে এক নতুন আশার আলো।
শেষ পর্যন্ত, আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প শুধু নামেই নয়, কাজে প্রমাণ করবে — সাধারণ মানুষের সমস্যা যত ছোটই হোক না কেন, সরকার তাতে নজর দিচ্ছে।
এটা রাজ্য সরকারের এমন এক পদক্ষেপ, যা শুধু ভোটের রাজনীতি নয়, উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাস্য (FAQ)
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প কী?
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’ হলো রাজ্য সরকারের একটি নতুন উদ্যোগ, যার মাধ্যমে প্রতিটি পাড়ার ছোট ছোট সমস্যা — যেমন রাস্তা, আলো, জল বা স্কুলের ছাদ মেরামতির মতো বিষয় — সরাসরি বুথভিত্তিক শিবিরে উপস্থিত হয়ে সমাধান করা হবে।
এই প্রকল্পে কারা সুবিধা পাবে?
এই প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যের প্রতিটি বুথের বাসিন্দারাই পাবেন। পাড়ার সাধারণ মানুষ যাঁরা দৈনন্দিন সমস্যার সম্মুখীন হন, তাঁরা সরাসরি সরকারি অফিসারদের কাছে সমস্যার কথা জানাতে পারবেন এবং সেগুলির দ্রুত সমাধান হবে।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্পে কী ধরনের সমস্যা সমাধান করা হবে?
এই প্রকল্পে মূলত পানীয় জলের অভাব, বিদ্যুতের সমস্যা, রাস্তার অবস্থা, স্কুল বা ICDS সেন্টারের অবকাঠামো সমস্যা, কল বসানো, ছাদ চুঁইয়ে জল পড়া ইত্যাদি নানাবিধ দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান করা হবে।
এই প্রকল্পে আবেদন করার পদ্ধতি কী?
আবেদন করার জন্য কোনও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। নির্ধারিত দিনে নিজের বুথ এলাকার শিবিরে গিয়ে সরাসরি সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার কথা জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কীভাবে ও কবে সেই সমস্যা সমাধান হবে।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প কবে থেকে শুরু হচ্ছে?
এই প্রকল্পটি ২ অগাস্ট থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলায় শুরু হচ্ছে এবং প্রায় ২ মাস ধরে চলবে। এই সময়ের মধ্যে সমস্ত বুথে পর্যায়ক্রমে শিবির হবে।
প্রতি বুথে কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে?
প্রতি বুথে ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। এই টাকা দিয়ে বুথভিত্তিক ছোট সমস্যাগুলোর সরাসরি সমাধান করা হবে।
দুয়ারে সরকার এবং এই প্রকল্পে কী পার্থক্য?
দুয়ারে সরকার মূলত বিভিন্ন সরকারি স্কিমে আবেদন গ্রহণের জন্য একটি কর্মসূচি। আর ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’ হলো আরও একধাপ এগিয়ে, যেখানে সরাসরি পাড়ার দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে কাজ হবে এবং সেগুলোর সমাধান করা হবে।
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্পে কী সরকারি স্কিমেও আবেদন করা যাবে?
হ্যাঁ, এই শিবিরে দুয়ারে সরকারের ডেস্কও থাকবে, যেখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা, স্বাস্থ্যসাথী ইত্যাদি প্রকল্পে আবেদন করা যাবে এবং সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে তা জানানো যাবে।
কাজের অগ্রগতি কীভাবে জানা যাবে?
সমস্ত কাজ অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে রেকর্ড করা হবে। যার ফলে যেকোনও সময় নির্দিষ্ট কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য জানা যাবে, এবং স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
এই প্রকল্প রাজ্যের কোন কোন এলাকায় প্রযোজ্য?
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প’ রাজ্যের প্রতিটি জেলা, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বুথভিত্তিক এলাকায় প্রযোজ্য। প্রতিটি পাড়ার মানুষের কাছে এই পরিষেবা পৌঁছানোর জন্যই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।