নিজস্ব প্রতিবেদন, Bengal Job Study.in : নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতার — কলকাতায় নবান্ন অভিযানের সময় পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে বিজেপি কর্মী চন্দন গুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত তাঁকে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এই সময়ে তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান এবং অভিযুক্তের ভূমিকা গভীরভাবে খতিয়ে দেখবে।
আদালতের নির্দেশে নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মীর পুলিশি হেফাজত
বুধবার দুপুরে ধৃত চন্দন গুপ্তকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নবান্ন অভিযানের দিন পুলিশের কনস্টেবলকে মারধর এবং বিশৃঙ্খলা তৈরিতে তাঁর সরাসরি ভূমিকা রয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, চন্দনের নাম এফআইআরে নেই এবং তাঁকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “আমার মক্কেল শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন, পালিয়ে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”
ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল
পুলিশের অভিযোগ, নবান্ন অভিযানে অংশ নেওয়া একদল কর্মী ডোরিনা ক্রসিংয়ে ইট নিয়ে এসেছিলেন। সেই ইট দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়। এক কনস্টেবলকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়, এমনকি তাঁর হেলমেট ভেঙে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি তিন দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
চন্দন গুপ্তকে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া
তদন্তে নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতারের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। ফুটেজে স্পষ্টভাবে চন্দনের উপস্থিতি ও কর্মকাণ্ড ধরা পড়ে। এর ভিত্তিতেই মঙ্গলবার কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগসমূহ
অভিযোগের ধারা | বিবরণ |
---|---|
খুনের চেষ্টা | গুরুতর আঘাতে মৃত্যুর সম্ভাবনা |
সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা | দায়িত্ব পালনে পুলিশকে বাধা দেওয়া |
ইচ্ছাকৃত আঘাত | উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালানো |
পুলিশ ও আদালতের অবস্থান
পুলিশের দাবি, নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মীর আচরণ সরাসরি আইন ভঙ্গের শামিল এবং এটি হাই কোর্টের নির্দেশিকারও লঙ্ঘন। তাঁদের মতে, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।
আদালত দুই পক্ষের যুক্তি শোনার পর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছিল, তা মঞ্জুর হয়নি।
মূল পয়েন্টসমূহ (লিস্ট আকারে)
- নবান্ন অভিযানে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ
- অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীর নাম চন্দন গুপ্ত
- ভিডিও ফুটেজে চন্দনের উপস্থিতি ধরা পড়েছে
- খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা
- আদালতের নির্দেশে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত
নবান্ন আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া রাজনৈতিক কর্মীর ভবিষ্যৎ আইনি লড়াই
নবান্ন আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হওয়া বিজেপি সমর্থক চন্দন গুপ্তের সামনে এখন দীর্ঘ আইনি লড়াই অপেক্ষা করছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা গুরুতর শাস্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে অভিযুক্ত পক্ষের দাবি, তিনি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। এই মামলার ফলাফল ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
কলকাতায় রাজনৈতিক মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট
কলকাতার রাজপথে রাজনৈতিক মিছিল ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ নতুন নয়। নবান্ন অভিযান ছিল এর সাম্প্রতিক উদাহরণ, যেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও গ্রেফতারি পদক্ষেপ নিতে হয়। ঘটনাস্থলের ফুটেজে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছেন। এই ভিডিও প্রমাণ আদালতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে এই ঘটনার প্রভাব
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নবান্ন অভিযানের এই গ্রেফতার রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শাসক ও বিরোধী শিবির একে অপরকে দোষারোপ করছে। বিশেষত, বিজেপি নেতারা বলছেন এটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার কৌশল, অন্যদিকে শাসক দল দাবি করছে, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পদক্ষেপ নিতেই হয়েছে।
নবান্ন অভিযানে গ্রেফতার সম্পর্কিত সাধারণ তথ্য
- অভিযুক্তের নাম: চন্দন গুপ্ত
- রাজনৈতিক পরিচয়: বিজেপি কর্মী
- অভিযোগ: পুলিশের উপর হামলা, খুনের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা
- গ্রেফতারের স্থান: কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকা
- হেফাজতের মেয়াদ: ১৫ আগস্ট পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ
নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতার সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতার কেন হয়েছিল?
নবান্ন অভিযানের সময় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে চন্দন গুপ্ত নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, তিনি ঘটনাস্থলে সক্রিয়ভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে যুক্ত ছিলেন এবং এক কনস্টেবলকে মারধর করেছিলেন।
নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতারের পর আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে?
আদালত চন্দন গুপ্তকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই সময়ে পুলিশ তাঁর ভূমিকা এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চালাবে।
চন্দন গুপ্তের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা হয়েছে?
তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া, হাই কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে।
নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতারের প্রমাণ কীভাবে পাওয়া গিয়েছে?
পুলিশ ঘটনাস্থলের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং সাক্ষীদের বয়ান নিয়ে চন্দন গুপ্তকে শনাক্ত করে। ফুটেজে তাঁকে হামলার সময় উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে।
নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মী গ্রেফতার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না?
অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেফতার। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে যা এই মামলায় চন্দন গুপ্তের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে।