৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে তৃণমূল-বিজেপির সংঘাতের সম্ভাবনা, উত্তেজনা তুঙ্গে

৫ অগস্ট কোচবিহারে তৃণমূল-বিজেপির মুখোমুখি কর্মসূচি ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। পাল্টা কৌশলে তৈরি রাজনৈতিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা।

Ujjwal Dey

By Ujjwal Dey

Updated on: August 3, 2025

৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি
৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল জব স্টাডি: ৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রতিদিন নতুন করে উত্তাল হচ্ছে বাংলার রাজনীতি। ধর্মতলায় মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি পেরিয়ে এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে কোচবিহারে। বিজেপি এবং তৃণমূলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে যে রাজনৈতিক সংঘাতের মেঘ জমেছে, তা ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরে। ৫ অগস্ট কোচবিহারে শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচিকে ঘিরে তৃণমূল যে ‘কৌশল’ নিচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

৫ অগস্ট শুভেন্দুর কর্মসূচি: উদ্দেশ্য কী?

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগামী মঙ্গলবার যাবেন কোচবিহার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্যের বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে মিছিল করে কোচবিহার পুলিশ সুপারের দফতরে যাওয়ার কথা তাঁর। এই কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছিল সেই ২১ জুলাই, যেদিন তৃণমূলের ধর্মতলা সভার দিনে তিনি উত্তরকন্যা অভিযান করেছিলেন।

তৃণমূলের জবাবি কৌশল: পথে নামছে ১৯টি জায়গায়

তৃণমূলও বসে নেই। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবিলায় তারা ১৯টি জায়গায় সমাবেশ করবে। এই সমস্ত সমাবেশের স্থান এমনভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখান দিয়ে শুভেন্দু ও তাঁর অনুগামীরা মিছিল করে প্রবেশ করবেন। অর্থাৎ কার্যত বিজেপির পথ আটকে দেওয়ার কৌশল!

পুলিশের ভূমিকা: অনুমতির অপেক্ষায় দুই পক্ষ

  • বিজেপি ইতিমধ্যেই পুলিশের অনুমতির বিষয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
  • তৃণমূলের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে তারাও একই পথে হাঁটবে।

এখানেই মূল দোটানা—পুলিশ কি একসঙ্গে দুই দলের কর্মসূচিতে ছাড়পত্র দেবে?

রাজনৈতিক টানাপোড়েন: সংঘর্ষের আশঙ্কা

বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, তৃণমূল কৌশলে এমনভাবে নিজেদের কর্মসূচি সাজিয়েছে যাতে শুভেন্দুর মিছিল ঘিরে ফেলা যায়। ফলে রাস্তায় মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াতে পারেন দুই দলের কর্মী-সমর্থকেরা। এতে অশান্তি সৃষ্টি হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

কে কী বলছেন?

তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক:
“২১ জুলাই শুভেন্দু নজর কাড়ার জন্য উত্তরকন্যা অভিযান করেছিলেন। আমরাও ৫ অগস্ট ১৯টি জায়গায় সমাবেশ করব। ওরা যদি তারিখ বদলায়, আমরাও বদলাব।”

বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু:
“শুভেন্দু এসপি-র সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, কোচবিহারের সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলবেন। তৃণমূল শুধু সংঘর্ষ চাইছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে।”

৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি – দুই দলের পরিকল্পনা (টেবিল)

দলকর্মসূচিঅবস্থানউদ্দেশ্য
বিজেপিশুভেন্দু-সহ বিধায়কদের মিছিলপুলিশ সুপারের দফতরের দিকেপ্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা
তৃণমূল১৯টি জায়গায় পাল্টা সমাবেশপ্রবেশপথের মুখেবিজেপির মিছিল কৌশলে ঘিরে ফেলা

অতীত ইঙ্গিত দিচ্ছে কী?

এই পরিস্থিতির সূত্রপাত ২১ জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকে। ধর্মতলার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন—বিজেপি যেদিন কর্মসূচি নেবে, সেদিনই তৃণমূলও কর্মসূচি নেবে। সেই বার্তার বাস্তবায়ন এবার কোচবিহারে দেখা যাচ্ছে।

কী হতে পারে ফলাফল?

  1. যদি দুই দল একসাথে কর্মসূচি পালন করে, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
  2. পুলিশ যদি একপক্ষকে ছাড়পত্র না দেয়, তাহলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা উভয় পক্ষেরই।

৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মানুষের মনে যা প্রশ্ন জাগছে

  1. শুভেন্দুর অভিযোগগুলোর ভিত্তি কী?
  2. তৃণমূল কেন একই দিন পাল্টা কর্মসূচি নিতে চাইছে?
  3. পুলিশ কি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে?

সারসংক্ষেপে বিষয়টি

  1. ধর্মতলার হুঁশিয়ারির পর তৃণমূলের পাল্টা কৌশল।
  2. ৫ অগস্ট বিজেপির মিছিল, তৃণমূলের সমাবেশ।
  3. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ।
  4. আদালতের অনুমতির দিকেও নজর।
  5. কোচবিহার এখন রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু।

কোচবিহারে রাজনৈতিক উত্তেজনা ঘিরে প্রশাসনের প্রস্তুতি বাড়ছে

কোচবিহারে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে প্রশাসন আগেই সতর্ক হয়ে উঠেছে। ৫ অগস্টের অনুষ্ঠানে যাতে কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য বিভিন্ন স্তরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিরোধী দলনেতার মিছিল ও পাল্টা শাসকদলের রাজনৈতিক সভা—দুটির সময় ও রুট আলাদা রাখার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন।

শুভেন্দুর মিছিল এবং তৃণমূলের প্রতিরোধ রাজনীতির নতুন দিশা দেখাবে?

শুভেন্দু অধিকারীর ঘোষিত অভিযান ও তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা কর্মসূচি আসলে বাংলা রাজনীতিতে নতুন এক লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি করছে। কোচবিহার রাজনৈতিক উত্তেজনা কেবল জেলা রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নেই—পুরো রাজ্য জুড়েই এর প্রভাব পড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কর্মসূচিগুলি আগামী দিনে রাজ্যের ক্ষমতার লড়াইয়ের ছকপথ নির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে।

FAQ: ৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন

শুভেন্দু অধিকারীর ৫ অগস্ট কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য কী?

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ৫ অগস্ট কোচবিহার যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো। তিনি দাবি করছেন, কোচবিহারে তৃণমূলের দাপট এবং সন্ত্রাস বেড়েই চলেছে, এবং সেই প্রসঙ্গেই তিনি দেখা করবেন এসপি-র সঙ্গে।

তৃণমূল একই দিনে পাল্টা কর্মসূচি কেন নিচ্ছে?

ধর্মতলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বার্তা দিয়েছিলেন, তারই বাস্তবায়ন হিসেবে ৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি রুখতে তৃণমূল ১৯টি জায়গায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করবে, তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে এটি কৌশলে বিজেপির মিছিল ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা।

পুলিশ কি দুই দলের কর্মসূচিকেই অনুমতি দেবে?

এখনও পর্যন্ত পুলিশ স্পষ্টভাবে জানায়নি তারা কার কর্মসূচিকে অনুমতি দেবে। বিজেপি ইতিমধ্যেই হাই কোর্টে গিয়ে অনুমতি নিয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে তারাও আদালতের দ্বারস্থ হবে। ফলে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সংঘর্ষের আশঙ্কা কতটা?

যেহেতু একই দিনে, কাছাকাছি এলাকায় দুটি বড় রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি রয়েছে, তাই সংঘর্ষ বা উত্তেজনার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে রাস্তার মুখে মুখে তৃণমূলের সমাবেশ ও বিজেপির মিছিল একসঙ্গে চললে, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ভবিষ্যতে আরও দেখা যাবে কি?

ধর্মতলায় মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে ভবিষ্যতে ৫ অগস্ট কোচবিহার রাজনৈতিক কর্মসূচি-র মতো পরিস্থিতি আরও তৈরি হতে পারে। রাজ্যের দুই প্রধান দলের টানাপোড়েন আগামী দিনেও এই ধরনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির রূপ নেবে বলে অনুমান করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Table of Contents

Leave a Comment

BengalJobStudy.in Bengal job study News Govt scheem